ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ঈদে কঠোর নিরাপত্তায় থাকছে ফাঁকা রাজধানী Logo প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে -রিজভী Logo বাংলাদেশে ভাঙার জন্য আনা জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা Logo নিউমার্কেটে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা Logo ওমরাহ ভিসা সংকটে বিপাকে যাত্রীরা Logo বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের পূর্ণ সমর্থন Logo আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে -প্রধান উপদেষ্টা Logo আগামী ২৮শে মার্চ বেইজিংয়ে শির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসছেন ড. ইউনূস Logo শ্রীপুরে আছিয়ার দাফন সম্পন্ন, ধর্ষণে অভিযুক্তের বাড়িতে জনতার আগুন Logo তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না? প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:০১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪ ২৬৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সমর্থন জানানো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজাকার স্লোগান দেওয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।

সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমূহের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রোববার (জুলাই ১৪) সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে থাকা এসব শিক্ষার্থীদের মিছিল থেকে আমি কে? তুমি কে? রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার সময় সাংবাদিক এবং প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কটাক্ষ করেছেন এবং তাদের রাজাকারের বাচ্চা বলেছেন। এর প্রতিবাদে রাতে তারা বিক্ষোভ করে। আওয়ামী লীগ ও সরকার সমর্থকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ভুল ব্যাখা করা হয়েছে।

সরকার সমর্থকদের অনেকে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ার লাইভ থেকে বিক্ষোভকারীদের আবারও শোনার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার বাহিনী যেভাবে এদেশে অত্যাচার করেছে। তাদের সেই অত্যাচার, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি, তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছেন, লাখো মা-বোন নির্যাতিতা, তাদের এই অবদান ভুললে চলবে না। এটা মনে রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হয়েছে, এখানে শান্তি কমিটিতে, কেউ রাজাকার কমিটিতে ছিল, কিন্তু অনেকে মানুষের ক্ষতি করেনি। কিন্তু যে বাহিনীগুলো তারা তৈরি করেছিল, তাদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল এবং তাদের দিয়ে মানুষের ক্ষতি করতো, অত্যাচার করতো, লুটপাট করতো, গণহত্যা চালাতো। তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, তাদের বিচার করে, অনেকের ফাঁসিও দিয়েছি। তাদের বিচারে যারা নির্যাতিত তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য এখন যখন শুনি মেয়েরাও স্লোগান দেয়, কোন দেশে আমরা আছি, এরা কী চেতনায় বিশ্বাস করে? কী শিক্ষা তারা নিলো? কী তারা শিখলো?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বের, জাতির পিতার একটি ডাকে এই দেশের মানুষ, ঘর-বাড়ি, পরিবার সব কিছু ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধে গেছে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছে। আর এই যারা বাহিনীতে (রাজাকার-আল বদর-আল শামস) ছিল তারা এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। সেটা ভুলে গেলে চলবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সেই শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে; তাহলেই এদেশ এগিয়ে যাবে। ’৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় ছিল ২১ বছর, তারপর ৯ বছর দেশকে কী দিতে পেরেছে? কিচ্ছু দিতে পারেনি। কিন্তু আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি। যখন ক্ষমতায় এসেছি মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বিশ্বের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ। সেই দলটাতো থাকতে হবে।

দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাই, এই বাংলাদেশ কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। মাথা নত করে চলবে না। বিশ্ব দরবারে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলবো। সেই বিশ্বাস নিয়ে আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না? প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট সময় : ০৪:০১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

 

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সমর্থন জানানো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজাকার স্লোগান দেওয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।

সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমূহের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রোববার (জুলাই ১৪) সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে থাকা এসব শিক্ষার্থীদের মিছিল থেকে আমি কে? তুমি কে? রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার সময় সাংবাদিক এবং প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কটাক্ষ করেছেন এবং তাদের রাজাকারের বাচ্চা বলেছেন। এর প্রতিবাদে রাতে তারা বিক্ষোভ করে। আওয়ামী লীগ ও সরকার সমর্থকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ভুল ব্যাখা করা হয়েছে।

সরকার সমর্থকদের অনেকে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ার লাইভ থেকে বিক্ষোভকারীদের আবারও শোনার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার বাহিনী যেভাবে এদেশে অত্যাচার করেছে। তাদের সেই অত্যাচার, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি, তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছেন, লাখো মা-বোন নির্যাতিতা, তাদের এই অবদান ভুললে চলবে না। এটা মনে রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হয়েছে, এখানে শান্তি কমিটিতে, কেউ রাজাকার কমিটিতে ছিল, কিন্তু অনেকে মানুষের ক্ষতি করেনি। কিন্তু যে বাহিনীগুলো তারা তৈরি করেছিল, তাদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল এবং তাদের দিয়ে মানুষের ক্ষতি করতো, অত্যাচার করতো, লুটপাট করতো, গণহত্যা চালাতো। তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, তাদের বিচার করে, অনেকের ফাঁসিও দিয়েছি। তাদের বিচারে যারা নির্যাতিত তারা ন্যায়বিচার পেয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য এখন যখন শুনি মেয়েরাও স্লোগান দেয়, কোন দেশে আমরা আছি, এরা কী চেতনায় বিশ্বাস করে? কী শিক্ষা তারা নিলো? কী তারা শিখলো?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বের, জাতির পিতার একটি ডাকে এই দেশের মানুষ, ঘর-বাড়ি, পরিবার সব কিছু ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধে গেছে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছে। আর এই যারা বাহিনীতে (রাজাকার-আল বদর-আল শামস) ছিল তারা এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। সেটা ভুলে গেলে চলবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সেই শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে; তাহলেই এদেশ এগিয়ে যাবে। ’৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় ছিল ২১ বছর, তারপর ৯ বছর দেশকে কী দিতে পেরেছে? কিচ্ছু দিতে পারেনি। কিন্তু আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি। যখন ক্ষমতায় এসেছি মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বিশ্বের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ। সেই দলটাতো থাকতে হবে।

দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাই, এই বাংলাদেশ কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। মাথা নত করে চলবে না। বিশ্ব দরবারে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলবো। সেই বিশ্বাস নিয়ে আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।