গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের নিরীহ সনাতনী সম্প্রদায়ের সদস্য সঞ্জয় কুমার সাহা (৪৭) এখন বাড়ী ছাড়া। এক সময়ের শান্ত-শিষ্ট দোকানদার আজ নিজের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অভিযোগ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান বিদ্যুৎ মিথ্যা চুরির অভিযোগে ফাঁসিয়ে সঞ্জয়ের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। তাতেও শেষ নয়—আরও ৫০ হাজার টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। প্রাণের ভয়ে লুকিয়ে থাকা সঞ্জয় গত মঙ্গলবার পলাশবাড়ীর ‘খবরবাড়ি টুয়েন্টিফোর ডটকম’ কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকদের সামনে এক হৃদয়বিদারক সংবাদ সম্মেলন করেন। কণ্ঠ কাঁপছিল, চোখে ছিল আতঙ্ক আর অজস্র অশ্রু। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি কোনো চুরির সঙ্গে জড়িত নই। হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ আমাকে মিথ্যা চুরির অপবাদ দেয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নেয়। এখন আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে আমাকে মারার হুমকি দিচ্ছে। আমি এখন নিজের ঘরে ফিরতে পারছি না। জীবনের নিরাপত্তা চাই।” সংবাদ সম্মেলনে সঞ্জয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, “আমি একজন সাধারণ মানুষ, ছোট দোকান চালিয়ে পরিবার চালাই। শুধু টাকার লোভে একজন রাজনৈতিক প্রভাবশালী মানুষ আমার জীবনটা নরকে পরিণত করেছে।” এ সময় উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। ঘটনার সত্যতা জানতে চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত আনিসুজ্জামান বিদ্যুতের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও বিভিন্ন অনিয়মে তার নাম জড়িত হয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। নিরীহ এক সনাতনীর জীবনের নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে—এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও সঞ্জয় কুমার সাহার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।