ভারতে পাচার করে নামানো হয় যৌনকর্মে
- আপডেট সময় : ৪৪১ বার পড়া হয়েছে
২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস। মুম্বাইয়ের বোরিভালি এলাকা থেকে এক তরুণীকে উদ্ধার করে ভারতের রেলওয়ে পুলিশ। তরুণীর অবস্থা তখন করুণ শয্যাশায়ী, শরীরে অপুষ্টির ছাপ। তার পরনে ছিল বড় আকারের একটি কুর্তি। তাকে দেখেই বোঝা যায়, মানসিকভাবে মোটেও সুস্থ নয়।
মুম্বাইয়ের কাছে শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনে যোগাযোগ করে পুলিশের দল। সংগঠনটি মানসিক রোগীদের নিয়ে কাজ করে। সেখানে পরীক্ষা করে ধরা পড়ে পোস্টপারটাম সাইকোসিসে ভুগছে তরুণী। সন্তান জন্মের পর কোনো কোনো মা বিরল এই মানসিক রোগে আক্রান্ত হন।
তরুণী বাংলাদেশি। তিন বছর আগে ভারতে পাচার হয়ে গিয়েছিলো। তার বাড়ি যশোর। ২২ বছরের তরুণীর বিয়ে হয়েছিলো এবং তার ৫ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। তার বাবা একজন রিকশাচালক। নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান পেয়ে তিনি বেশ খুশি।
সীমান্ত পার হওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে এই তরুণী বলেন, সীমান্ত পার হওয়ার আগে আমরা সবাই একটি কাঁটাতারের বেড়ার কাছে লুকিয়ে ছিলাম। সশস্ত্র সীমান্ত প্রহরীরা এক পাশ থেকে অন্য পাশে গেলে আমরা একজন একজন করে সীমানা অতিক্রম করেছিলাম।
পাচারের পর প্রথমে তরুণীকে পশ্চিমবঙ্গে নেওয়া হয়। সেখানে একটি ঘরে অন্য নারীদের সঙ্গে আটকে রেখে তাকে অত্যাচার করা হয়। তার অভিযোগ, কলকাতাতে তাকে যৌনকর্মে বাধ্য করা হয়েছিল। দিল্লিতেও তাকে একই কাজে বাধ্য করা হয়। একপর্যায়ে তিনি পুনেতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়ে যান। তবে সেখানেও যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাকে।
বাড়ির ঠিকানা মনে করতে পারছিলো না সে। শুধু বলেছিলো তাদের বাড়ি ইছামতী কলেজ ও ইছামতী নদীর কাছে। জায়গাটি যশোরে। এই জেলার সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে।
তরুণীর দেওয়া এসব ভাসা ভাসা তথ্যের ভিত্তিতে রাইটস যশোর নামে একটি এনজিওর সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রদ্ধা পুর্নবাসন ফাউন্ডেশন। এভাবে তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়।
তরুণীর বাবা বলেন, প্রায় এক বছর আগে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এসে তার মেয়ে সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। এরপর মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন তিনি। আশা করছেন, যত দ্রুত সম্ভব সন্তানকে কাছে পাবেন। বাড়ি ফেরার জন্য অধীর অপেক্ষায় ২২ বছরের তরুণী। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

























