ঢাকা ০১:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

মুরাদনগর ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জায়গা এখন ফুল বাগান

আলমগীর হোসেন, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:১২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪ ৩০৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জায়গায় স্তুপ হয়ে পড়েছিল ময়লা আবর্জনা। এসব ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল চারদিকে। পচা ময়লা-আবর্জনার উৎকট গন্ধে পাশ দিয়ে কেউ যাতায়াত করতোনা। অবশেষে অপসারণ করা হলো সেই ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। স্থানটিতে এখন শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুলের সৌন্দর্য্য মন্ডিত দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান। রয়েছে নানা রকম সবজির সমারোহ। পরিত্যক্ত জায়গায় ফুল আর সবুজের সমারোহে মুগ্ধ হচ্ছেন সকলেই। আর দৃষ্টিন্দন এই কাজটি করেছেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা।

জানা যায়, ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জায়গাটি শোভা বর্ধনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে গিয়েছিলেন সাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হুদা। মটিও ফেলেছিলেন। কিন্তু কাজ শুরু করার আগেই বদলি জনিত কারনে তিনি অন্যত্র চলে যান। নাসরিন সুলতানা নিপা মুরাদনগরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদানের পর থেকেই অফিসের জায়গাটির প্রতি নজর দেন। তিনি জায়গাটির পরিবেশ সুন্দর করার চিন্তা ভাবনা করেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। নিজ উদ্যোগে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভুবনঘর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা সামসুল হক এর সহযোগিতায় গড়ে তুলেন ফুলের বাগান। বাগানটিতে গোলাপ, গাঁদা, জবা, ডালিয়া, ক্রিসমাসসহ প্রায় বহু প্রজাতির ফুল গাছ রয়েছে। পাশাপাশি চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি। শুধু পরিত্যক্ত জায়গাটি নয়, অফিস বাইন্ডারির বাহিরে ও প্রবেশ ধারে লাগিয়েছেন হরেক রকমের ফুল গাছ।

কৃষি উদ্যোক্তা সামসুল হক বলেন, আগের এসিল্যান্ড নাজমুল হুদা স্যার আমাকে ডেকে এনে জায়গাটি পরিস্কার করে ফুল ও সবজির বাগান করতে বলেন। বাগান করার প্রতি ওনার আগ্রহ দেখে বাগান তৈরা করতে রাজি হই। কিন্ত স্যার বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। তবে বর্তমান এসিল্যান্ড নাসরিন সুলতানা নিপা স্যারের ফুলবাগান ও কৃষির প্রতি আগ্রহ অনেক। স্যারের আগ্রহের কারনেই আজকে পরিত্যক্ত জায়গাটিতে ফুল ও সবজির বাগান করতে পেরেছি। অনেকেই বাগানটি দেখতে আসেন। এসিল্যান্ড স্যারও নিয়মিত বাগানটি ঘুরে দেখেন।
ভূমি অফিসের কর্মচারীরা বলেন, জায়গাটিতে এক সময় ময়লার স্তুপ ছিল। এসিল্যান্ড স্যার এসেই অফিস চত্বর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করেন। পরে অফিস চত্বর সহ পরিত্যক্ত জায়গাটিতে বিভিন্ন রকমের ফুল, ফল ও সবজির চারা রোপণ করেন। জায়গাটি এখন দেখে বুঝার উপায় নেই যে, এই জায়গাতে একসময় ময়লার স্তুপ ছিল।
অফিসে নামজারি কাজের জন্য আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে আবর্জনার কারণে এখান থেকে অনেক দুর্গন্ধ আসতো। এখন জায়গাটিতে গাছ লাগিয়ে সুন্দর করা হয়েছে। হরেক রকমের ফুলও ফুটেছে। এমন একটি সুন্দর কাজ করার জন্য এসিল্যান্ড স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।

সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, আমার কাছে মনে হয় কাজের পরিবেশটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। আমাদের সরকারি অফিসগুলতে বিশেষ করে ভূমি অফিসে অনেক সেবা গ্রহীতা আসেন। তখন তাদের কে সেবা নিতে অপেক্ষা করতে হয়। সেবা গ্রহীতাদের অপেক্ষা যেন ক্লান্তীকর না হয় এই জন্য পরিবেশটা সুন্দর হওয়া খুব জরুরী।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বলেছেন কোন জমি যেন ফাঁকা না থাকে তাই ফুলের বাগানের পাশাপাশি সবজির বাগান ও বিভিন্ন ফলজ গাছ রোপন করেছি। আগে ভূমি অফিস কম্পাউন্ডের আশপাশে ধুলাবালি, পেছনে ময়লা-আবর্জনা স্তুপ ছিল। এখন পরিবেশটা মনোরম হয়েছে। হাজারো কাজের মাঝে ব্যস্ত, ক্লান্তিকর দিনে যখনই বাগানে যাই, সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখতে আসলেই সবুজের বিকল্প নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মুরাদনগর ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জায়গা এখন ফুল বাগান

আপডেট সময় : ০৪:১২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মার্চ ২০২৪

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জায়গায় স্তুপ হয়ে পড়েছিল ময়লা আবর্জনা। এসব ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল চারদিকে। পচা ময়লা-আবর্জনার উৎকট গন্ধে পাশ দিয়ে কেউ যাতায়াত করতোনা। অবশেষে অপসারণ করা হলো সেই ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। স্থানটিতে এখন শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুলের সৌন্দর্য্য মন্ডিত দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান। রয়েছে নানা রকম সবজির সমারোহ। পরিত্যক্ত জায়গায় ফুল আর সবুজের সমারোহে মুগ্ধ হচ্ছেন সকলেই। আর দৃষ্টিন্দন এই কাজটি করেছেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা।

জানা যায়, ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জায়গাটি শোভা বর্ধনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে গিয়েছিলেন সাবেক সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজমুল হুদা। মটিও ফেলেছিলেন। কিন্তু কাজ শুরু করার আগেই বদলি জনিত কারনে তিনি অন্যত্র চলে যান। নাসরিন সুলতানা নিপা মুরাদনগরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদানের পর থেকেই অফিসের জায়গাটির প্রতি নজর দেন। তিনি জায়গাটির পরিবেশ সুন্দর করার চিন্তা ভাবনা করেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। নিজ উদ্যোগে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভুবনঘর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা সামসুল হক এর সহযোগিতায় গড়ে তুলেন ফুলের বাগান। বাগানটিতে গোলাপ, গাঁদা, জবা, ডালিয়া, ক্রিসমাসসহ প্রায় বহু প্রজাতির ফুল গাছ রয়েছে। পাশাপাশি চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি। শুধু পরিত্যক্ত জায়গাটি নয়, অফিস বাইন্ডারির বাহিরে ও প্রবেশ ধারে লাগিয়েছেন হরেক রকমের ফুল গাছ।

কৃষি উদ্যোক্তা সামসুল হক বলেন, আগের এসিল্যান্ড নাজমুল হুদা স্যার আমাকে ডেকে এনে জায়গাটি পরিস্কার করে ফুল ও সবজির বাগান করতে বলেন। বাগান করার প্রতি ওনার আগ্রহ দেখে বাগান তৈরা করতে রাজি হই। কিন্ত স্যার বদলি হয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। তবে বর্তমান এসিল্যান্ড নাসরিন সুলতানা নিপা স্যারের ফুলবাগান ও কৃষির প্রতি আগ্রহ অনেক। স্যারের আগ্রহের কারনেই আজকে পরিত্যক্ত জায়গাটিতে ফুল ও সবজির বাগান করতে পেরেছি। অনেকেই বাগানটি দেখতে আসেন। এসিল্যান্ড স্যারও নিয়মিত বাগানটি ঘুরে দেখেন।
ভূমি অফিসের কর্মচারীরা বলেন, জায়গাটিতে এক সময় ময়লার স্তুপ ছিল। এসিল্যান্ড স্যার এসেই অফিস চত্বর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করেন। পরে অফিস চত্বর সহ পরিত্যক্ত জায়গাটিতে বিভিন্ন রকমের ফুল, ফল ও সবজির চারা রোপণ করেন। জায়গাটি এখন দেখে বুঝার উপায় নেই যে, এই জায়গাতে একসময় ময়লার স্তুপ ছিল।
অফিসে নামজারি কাজের জন্য আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে আবর্জনার কারণে এখান থেকে অনেক দুর্গন্ধ আসতো। এখন জায়গাটিতে গাছ লাগিয়ে সুন্দর করা হয়েছে। হরেক রকমের ফুলও ফুটেছে। এমন একটি সুন্দর কাজ করার জন্য এসিল্যান্ড স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।

সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, আমার কাছে মনে হয় কাজের পরিবেশটা খুবই গুরুত্বপূর্ন। আমাদের সরকারি অফিসগুলতে বিশেষ করে ভূমি অফিসে অনেক সেবা গ্রহীতা আসেন। তখন তাদের কে সেবা নিতে অপেক্ষা করতে হয়। সেবা গ্রহীতাদের অপেক্ষা যেন ক্লান্তীকর না হয় এই জন্য পরিবেশটা সুন্দর হওয়া খুব জরুরী।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বলেছেন কোন জমি যেন ফাঁকা না থাকে তাই ফুলের বাগানের পাশাপাশি সবজির বাগান ও বিভিন্ন ফলজ গাছ রোপন করেছি। আগে ভূমি অফিস কম্পাউন্ডের আশপাশে ধুলাবালি, পেছনে ময়লা-আবর্জনা স্তুপ ছিল। এখন পরিবেশটা মনোরম হয়েছে। হাজারো কাজের মাঝে ব্যস্ত, ক্লান্তিকর দিনে যখনই বাগানে যাই, সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখতে আসলেই সবুজের বিকল্প নেই।