‘সরকারী মদদে তালবাহানা চলছে, এ মাসেই গণভোট দিতে হবে’
- আপডেট সময় : ২৩ বার পড়া হয়েছে
সরকারী মদদে গণভোটের তালবাহানা চলছে এ মাসেই গণভোট দিতে হবে । বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন যারা জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে জুডিসিয়াল হত্যাকান্ড করে ভেবেছিল জামায়াতকে নিশ্চিত ভাবে শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু জামায়াত আছে, জামায়াত এবং শিবির থাকবে ইনশাআল্লাহ। বরং আগের তুলনায় হাজার গুণ বেশী জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু যারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে, নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে,লাখলাখ নেতাকর্মীকে জেলে আবদ্ধ রেখে শেষ করে দিতে চেয়েছিল,তারা আজ কোথায়? তিনি বলেন, তারা জানেনা জুলুম নির্যাতন চালিয়ে কোন আদর্শকে শেষ করা যায়না।
গতকাল বুধবার ফেনীর ট্রাংক রোডের কেন্দ্রীয় ভাষা শহীদ মিনারে জেলা জামায়াত আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জেলা আমীর মুফতি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরা সদস্য ও কুমিল্লা অন্চলীয় দায়ীত্বের সদস্য ও ফেনী – ২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ও ফেনী-৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডাঃ ফখরুদ্দিন মানিক,ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এ্যাডঃ এএসএম কামাল উদ্দিন।ফেনী জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আবদুর রহিমের সন্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমীর ও কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরা সদস্য অধ্যাপক আবু ইউসুফ, ফেনী সদর উপজেলা আমীর মাওলানা নাদেরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা ফারুক আহমেদ আযাদ, ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি ওমর ফারুক,শহর জামায়াতের আমীর ইন্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম।
সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী ও বর্ষিয়ান জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন,সকল রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে যে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হয়েছে দেশের ইতিহাসে তা যুগান্তকারী ঘটনা। এটি বাস্তবায়িত হয়নি, হলে এর মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং হারানো ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। যার ফলে আগের মত দিনের ভোট রাতে হতো না, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার সুযোগ থাকবে না। এই জন্য জুলাই সনদকে আইনে পরিণত করতে হবে। এর সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন আগামীতে জনগণ যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামীকে দেয় তবে শোষণহীন, বৈষম্যহীন একটি মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা হবে। আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর নির্দেশিত পথে সততার সাথে জনগণের আমানত সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করব। তিনি আগামী নির্বাচনে দেশ ও সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামী শক্তির পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, অনেক দল আর নেতা দেখেছেন, এবার একটি বারের জন্য জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচিত করে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করুন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা জামায়াত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে সরকারি বরাদ্দের আমানত জনগণের কল্যাণের কাজেই শুধু ব্যবহার হবে।
তিনি বলেন,জুলাই সনদের আইনি ব্যবস্হা ব্যাতিত জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সাথে প্রতারণার শামিল। ফ্যাসিবাদি কাঠামো বহাল রেখে একটি যেনতেন নির্বাচন দেশের সমস্যা সমাধানের পথ নয় বলেও তিনি দাবী করেন।
তিনি আরো বলেন,দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে তবে তার আগে সরকারকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থা জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধিত্ব ও ক্ষমতার প্রয়োগ হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন আনুপাতিক হারে (পিআর পদ্ধতি) নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জুলাই সনদে পিআর অন্তর্ভুক্ত করে সংসদের উভয় কক্ষে তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন নির্বাচন ব্যবস্থার ত্রুটিজনিত এবং সংবিধানিক একক ব্যক্তির সর্বময় ক্ষমতাকে পুঁজি করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার হয়েছে।তারা নির্বাচনকে হাস্য তামাশা পরিণত করেছে। জনগণের ভোটের, বাক স্বাধীনতার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। সেই ব্যবস্থা আর বহাল রাখা যাবে না।
২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জন আকাঙ্খাকে ধারণ করে জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তিকে আগে নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের দ্রুত বিচার ব্যবস্হার দৃশ্যমান করতে হবে। তারা যারা বারবার গণতন্ত্র হত্যা করেছে মানুষের ভোটের অধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে সেই স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যার দায়ে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
জামায়াত নেতা আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামি ক্ষমতায় গেলে সকল বৈষম্য দূর করবে ধর্মবর্ণ দলমত ও নারীর সর্বোচ্চ অধিকার কে সমুন্নত করবে। সাম্য সামাজিক সুবিচার ও মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করবে। দেশের শিক্ষিত অশিক্ষিত দক্ষ ও অদক্ষ কর্মজীবী মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিবে।জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরো বলেন ,জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতিকে জাদুঘরে পাঠানো হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সিন্ডিকেটের মূলৎপাটন করা হবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য নির্মূল করা হবে।
তিনি বলেন,আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এ বাংলাদেশে আল্লাহর আইন এবং সৎ লোকের শাসন কায়েম করার লড়াই করছি। যতদিন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েম না হবে ততদিন আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে ইনশাআল্লাহ। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের অসংখ্য ভাইকে ক্রসফায়ার দিয়েছে। কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল। দূর্নীতি বন্ধ করতে পারলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।তার জন্য সৎ খোদাভিরু ব্যাক্তিদের নির্বাচিত করতে হবে।

















