ঢাকা ০৮:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

সীমান্তে পুশইনের চেষ্টা ঠেকাতে পদক্ষেপ

হালিম মোহাম্মদ
  • আপডেট সময় : ১১:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পুশইন ও কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচারের চেষ্টা প্রতিহত করতে রাজশাহীর সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুধু তাই নয়, সীমান্তে পুশইনের মতো অবৈধ কর্মকান্ড ঠেকাতে প্রস্তত রয়েছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদারসহ সকল ধরনের পাচার রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে এই বাহিনী। গত ৫ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী বিজিবি সেক্টরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক।
তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে যাতে কোনো ধরনের চোরাচালান বা অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে জন্য বিজিবির নিয়মিত টহল, গোয়েন্দা নজরদারি এবং স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পুশইনের ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, যেসব স্থানে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, সেসব স্থানে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। কোরবানির পর পশুর চামড়া যাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাচার না হয়, সে বিষয়ে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেও জানান বিজিবির এই কর্মকর্তা।
অপরদিকে যশোরের বেনাপোলসহ তার আশপাশের সীমান্ত দিয়ে কোরবানীর চামড়া পাচার ও পুশ ইন ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি দেওয়া পশুর চামড়া পাচার রোধ এবং বাংলাদেশের ভেতরে লোকজনকে ঠেলে দেওয়া (পুশ ইন) প্রতিরোধে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কোরবানীর ঈদের দিন শনিবার বিকেলে যশোর বেনাপোল সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী খ্যাত বাহিনীর পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছর কোরবানির সময় সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের ঝুঁকি থাকে। এবছরও আমরা সতর্ক আছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভারত থেকে গরু আনার ক্ষেত্রে যাতে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য বিজিবি প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনগণ যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য সীমান্তসহ অভ্যন্তরীণ এলাকাতেও বিজিবি তৎপর রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।তিনি বলেন, ঈদের জামাত নির্বিঘœ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে বিজিবিও কাজ করবে। অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি সদা সচেতন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ‘পুশ ইন’ প্রতিরোধেও বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিনেও বিজিবির সদস্যরা সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা জোরদার করে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে দেশে চামড়ার দাম বাড়লেও বাজারে নেই স্বস্তি। জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা-বেচা। গতকাল শনিবার ঈদের দিনে দুপুরের পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া নিয়ে ভিড় করছেন বিক্রেতারা।
অপরদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার গরু ও মহিষের চামড়ার আকৃতি ও ধরণ অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটে ৫ টাকা করে দাম বাড়ানো হয়েছে। লবণ ছিটানো চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। খাসি ও বকরির চামড়ার দামেও বেড়েছে ২ টাকা। তবে বিক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার বড় চামড়ার দাম প্রায় ২০০ টাকা কমিয়ে মাত্র ৬০০ টাকা প্রস্তাব করছেন ক্রেতারা।
অন্যদিকে চামড়া কেনার পর তা ট্যানারিতে পৌঁছাতে নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যেখানে অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা খরচ হয় বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা। এই বাড়তি খরচের অজুহাত দেখিয়েই তারা দাম কম রাখছেন বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, বিদেশি ক্রেতা না থাকায় চামড়া রফতানি হঠাৎ করে কমে গেছে। ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে চামড়া রফতানিতে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

সীমান্তে পুশইনের চেষ্টা ঠেকাতে পদক্ষেপ

আপডেট সময় : ১১:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

পুশইন ও কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচারের চেষ্টা প্রতিহত করতে রাজশাহীর সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুধু তাই নয়, সীমান্তে পুশইনের মতো অবৈধ কর্মকান্ড ঠেকাতে প্রস্তত রয়েছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি জোরদারসহ সকল ধরনের পাচার রোধে সম্মিলিতভাবে কাজ করছে এই বাহিনী। গত ৫ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী বিজিবি সেক্টরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক।
তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে যাতে কোনো ধরনের চোরাচালান বা অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে জন্য বিজিবির নিয়মিত টহল, গোয়েন্দা নজরদারি এবং স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পুশইনের ঘটনা ঘটেনি বলে নিশ্চিত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, যেসব স্থানে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি, সেসব স্থানে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। কোরবানির পর পশুর চামড়া যাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাচার না হয়, সে বিষয়ে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেও জানান বিজিবির এই কর্মকর্তা।
অপরদিকে যশোরের বেনাপোলসহ তার আশপাশের সীমান্ত দিয়ে কোরবানীর চামড়া পাচার ও পুশ ইন ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি দেওয়া পশুর চামড়া পাচার রোধ এবং বাংলাদেশের ভেতরে লোকজনকে ঠেলে দেওয়া (পুশ ইন) প্রতিরোধে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কোরবানীর ঈদের দিন শনিবার বিকেলে যশোর বেনাপোল সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী খ্যাত বাহিনীর পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সীমান্তের নিরাপত্তা বিধান ও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সীমান্ত দিয়ে কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।
বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছর কোরবানির সময় সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের ঝুঁকি থাকে। এবছরও আমরা সতর্ক আছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভারত থেকে গরু আনার ক্ষেত্রে যাতে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য বিজিবি প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে জনগণ যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য সীমান্তসহ অভ্যন্তরীণ এলাকাতেও বিজিবি তৎপর রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।তিনি বলেন, ঈদের জামাত নির্বিঘœ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে বিজিবিও কাজ করবে। অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি সদা সচেতন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ‘পুশ ইন’ প্রতিরোধেও বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের দিনেও বিজিবির সদস্যরা সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা জোরদার করে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে দেশে চামড়ার দাম বাড়লেও বাজারে নেই স্বস্তি। জানা গেছে, প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা-বেচা। গতকাল শনিবার ঈদের দিনে দুপুরের পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া নিয়ে ভিড় করছেন বিক্রেতারা।
অপরদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার গরু ও মহিষের চামড়ার আকৃতি ও ধরণ অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটে ৫ টাকা করে দাম বাড়ানো হয়েছে। লবণ ছিটানো চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। খাসি ও বকরির চামড়ার দামেও বেড়েছে ২ টাকা। তবে বিক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার বড় চামড়ার দাম প্রায় ২০০ টাকা কমিয়ে মাত্র ৬০০ টাকা প্রস্তাব করছেন ক্রেতারা।
অন্যদিকে চামড়া কেনার পর তা ট্যানারিতে পৌঁছাতে নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যেখানে অতিরিক্ত ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা খরচ হয় বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা। এই বাড়তি খরচের অজুহাত দেখিয়েই তারা দাম কম রাখছেন বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, বিদেশি ক্রেতা না থাকায় চামড়া রফতানি হঠাৎ করে কমে গেছে। ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে চামড়া রফতানিতে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।