ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ত্রিশালে জমি সংক্রান্ত বিরোধে দুই শতাধিক পেঁপে গাছ নিধনের অভিযোগ Logo দাগনভূঞায় সেতু আছে, সড়ক নেই। জনভোগান্তি চরমে Logo বাগেরহাটে জমি দখলের চেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে Logo নিয়ামতপুরে বিএনপির উঠান বৈঠক Logo দিনাজপুরে পুষ্টির সচেতনতামূলক বৃদ্ধিকরন নিয়ে কর্মশালা Logo শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ১৫ বছর পর চালু হলো ৩ কেবিন  Logo পাথরঘাটায় প্রবাসী স্ত্রীকে মারধর করে টাকা-স্বর্ণালংকার লুট, ১৮ লাখ চাঁদা দাবি  Logo নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ Logo মামলার বাদীকে ভয়ভীতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo নাটোরে জুঁই হত্যাকারীদের গ্রেফতারে আল্টিমেটাম, দিল বৈষম্যছাত্র বিরোধী আন্দোলন

মারা গেলেন জল্লাদ শাহজাহান

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:০২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪ ২২১ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

৩২ বছরের কারাজীবনে ৬০ জনের ফাঁসি কার্যকর করেন এই জল্লাদ। তার বিরুদ্ধে ছিলো ৩৬টি মামলা। যার মধ্যে একটি অস্ত্র মামলা, একটি ডাকাতি মামলা এবং বাকি ৩৪টিই হত্যা মামলা। ১৯৯১ সালে আটক হন এই অপরাধী।

সোমবার (২৪ জুন)   হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া।

তার বোন ফিরোজা সংবাদমধ্যমকে জানান, ভাই বেশ কিছুদিন ধরে  হেমায়েতপুরে থাকতেন। রোববার (২৩ জুন) রাতে তার বুকে ব্যথা শুরু হলে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

বিচারকাজে দেরি হওয়ার কারণে সাজা ছাড়াই ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চার বছর হাজতি হিসেবে কারাগারে থাকেন। ১৯৯৫ সালে তার সাজা হয় ১৪৩ বছরের। পরে ৮৭ বছরের সাজা মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদন্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা নেমে আসে ৪৩ বছরে।

জানা যায়, সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় কয়েদি থেকে জল্লাদ বনে যান শাহজাহান। একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেতে।

তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, জল্লাদ শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন। এরমধ্যে ছয়জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি, চারজন যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি নেতা বাংলাভাইসহ দুজন জেএমবি সদস্য এবং আরও ১৪ জন অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামির ফাঁসি কার্যকর করে।

নারীঘটিত একটি ঘটনার পরে শাহজাহান বাংলাদেশের একজন বহুল পরিচিত সন্ত্রাসীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করার পর থেকে যেকোনো অপারেশনে তার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরমধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অপারেশন করেছিলেন ১৯৯১ সালে মাদারীপুর জেলায় এবং এটাই ছিল তার জীবনের সবশেষ অপারেশন। অপারেশন শেষে মানিকগঞ্জ হয়ে ঢাকায় ফেরার চেষ্টা করছিলেন শাহজাহান। গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে পৌঁছে যায় সেই খবর।

মানিকগঞ্জে পুলিশ চেকপোস্ট বসালে শাহজাহান তার এলাকার বাহিনীর মাধ্যমে তা জানতে পারেন। কিন্তু সব জেনেও এলাকা দিয়েই ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। মানিকগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিও হয়। কিন্তু পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

ঢাকায় পৌঁছে যখন নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন, পথিমধ্যে পুলিশ তাকে আটক করে। সেদিনই তার গতিময় জীবনের সমাপ্তি এবং এরপর থেকে বন্দিজীবন শুরু হয়।

জীবনের সোনালী সময়গুলো কারাগারেই কাটাতে হবে, এমন ভাবনা থেকে শাহজাহান চিন্তা করলেন, জল্লাদ হিসেবে সময় দিলে তার সাজা কিছুদিনের জন্যে হলেও কমবে। তাই নিজেকে অন্যভাবে প্রস্তুত করার জন্য জেল সুপারের কাছে গিয়ে জল্লাদের খাতায় নাম লেখানোর আগ্রহপ্রকাশ করেন।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মারা গেলেন জল্লাদ শাহজাহান

আপডেট সময় : ০৬:০২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

 

৩২ বছরের কারাজীবনে ৬০ জনের ফাঁসি কার্যকর করেন এই জল্লাদ। তার বিরুদ্ধে ছিলো ৩৬টি মামলা। যার মধ্যে একটি অস্ত্র মামলা, একটি ডাকাতি মামলা এবং বাকি ৩৪টিই হত্যা মামলা। ১৯৯১ সালে আটক হন এই অপরাধী।

সোমবার (২৪ জুন)   হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া।

তার বোন ফিরোজা সংবাদমধ্যমকে জানান, ভাই বেশ কিছুদিন ধরে  হেমায়েতপুরে থাকতেন। রোববার (২৩ জুন) রাতে তার বুকে ব্যথা শুরু হলে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

বিচারকাজে দেরি হওয়ার কারণে সাজা ছাড়াই ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চার বছর হাজতি হিসেবে কারাগারে থাকেন। ১৯৯৫ সালে তার সাজা হয় ১৪৩ বছরের। পরে ৮৭ বছরের সাজা মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদন্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা নেমে আসে ৪৩ বছরে।

জানা যায়, সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় কয়েদি থেকে জল্লাদ বনে যান শাহজাহান। একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেতে।

তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, জল্লাদ শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৬ জনের ফাঁসি দিয়েছেন। এরমধ্যে ছয়জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি, চারজন যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি নেতা বাংলাভাইসহ দুজন জেএমবি সদস্য এবং আরও ১৪ জন অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামির ফাঁসি কার্যকর করে।

নারীঘটিত একটি ঘটনার পরে শাহজাহান বাংলাদেশের একজন বহুল পরিচিত সন্ত্রাসীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করার পর থেকে যেকোনো অপারেশনে তার চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরমধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অপারেশন করেছিলেন ১৯৯১ সালে মাদারীপুর জেলায় এবং এটাই ছিল তার জীবনের সবশেষ অপারেশন। অপারেশন শেষে মানিকগঞ্জ হয়ে ঢাকায় ফেরার চেষ্টা করছিলেন শাহজাহান। গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে পৌঁছে যায় সেই খবর।

মানিকগঞ্জে পুলিশ চেকপোস্ট বসালে শাহজাহান তার এলাকার বাহিনীর মাধ্যমে তা জানতে পারেন। কিন্তু সব জেনেও এলাকা দিয়েই ঢাকায় ফেরার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। মানিকগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিও হয়। কিন্তু পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

ঢাকায় পৌঁছে যখন নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন, পথিমধ্যে পুলিশ তাকে আটক করে। সেদিনই তার গতিময় জীবনের সমাপ্তি এবং এরপর থেকে বন্দিজীবন শুরু হয়।

জীবনের সোনালী সময়গুলো কারাগারেই কাটাতে হবে, এমন ভাবনা থেকে শাহজাহান চিন্তা করলেন, জল্লাদ হিসেবে সময় দিলে তার সাজা কিছুদিনের জন্যে হলেও কমবে। তাই নিজেকে অন্যভাবে প্রস্তুত করার জন্য জেল সুপারের কাছে গিয়ে জল্লাদের খাতায় নাম লেখানোর আগ্রহপ্রকাশ করেন।