সংবিধান রচনাকারীই বাস্তবায়নকারী, এটা কনফ্লিক্ট: নুরুল কবির
- আপডেট সময় : ০৫:৫৬:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪ ১২৫ বার পড়া হয়েছে
নিউএজ এর সম্পাদক নুরুল কবির বলেছেন, যিনি সংবিধান রচনা করেন, তিনি বাস্তবায়ন করেন এটা কনফ্লিক্ট। জাতিরাষ্ট্র করার নামে দলীয় সংবিধান করা হয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্যে সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধন করতে হলে সব ভিন্নমতের উপস্থিতি জরুরি। সংবিধান মানে শুধু বাক স্বাধীনতাই নায়, সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। ২০১৮ সালে যখন গণহারে কোটা আন্দোলনকারীদের জামিন না মঞ্জুর করেছিল তখন কামাল হোসেন ও জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিম্ন আদালতে বসেছিলেন, সেটিও মনে রাখতে হবে। যারা ঐতিহাসিকভাবে সুবিধা বঞ্চিত তাদের কথাও কোটা আন্দোলনকারীরা মনে রাখবেন।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আগে ইচ্ছে মত আদালতকে ব্যবহার করা হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে আর কোনো অবৈধ রায় দেয়া যাবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এটি পুনর্লিখন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। যদি কোনো দল নির্বাচনে ৩০০ আসনও পায় তারাও এই সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সংবিধান সংশোধনের পক্ষে আমি না। এটি সংশোধন কোনো কাজে আসবে না। এটি পুনর্লিখন ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে ‘ক’ ধারায় এমন কিছু জিনিস আনা হয়েছে যেটি সংশোধন করার কোনো উপায় নেই।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, সাংবিধানিকভাবে এক নায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর হাতে অভাবনীয় ক্ষমতা। নির্বাচনী সার্চ কমিটি অস্বচ্ছ ছিল। শেখ হাসিনা নিজের লোকদের কমিশনে বসিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঐক্যমতের জায়গাকে গণতন্ত্র মনে করি না। সহনশীলভাবে মতপ্রকাশ এবং মত প্রকাশে সংখ্যালঘুর নিশ্চয়তা বিধানই হচ্ছে গণতন্ত্র। আমাদের সেই গণতন্ত্র পুনর্গঠন করতে হবে। তাই সংবিধানে হাত দেয়া ছাড়া আমি আর কোনো পথ দেখতে পাচ্ছি না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দিলরুবা শোর্মিন বলেন, সংবিধানকে শেখ হাসিনা দুর্বোধ্য করেছেন। আদালতকেও দমন করেছে এই সংবিধান দিয়ে। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের ‘খ’ এর সাংবিধানিক জুজুর ভয় কাটানো দরকার।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজুল আলম বলেন, জনগণের বৃহত্তর অংশ কি চাচ্ছে সেটা গুরুত্ব দিতে হবে। যে ত্যাগের মাধ্যমে বর্তমান দেশ অর্জন সংবিধানে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। ৭১ এর আকাঙ্ক্ষা বাদ দেয়া হলে সংবিধান পুনর্লিখন আত্মঘাতী হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফ হাসান আরিফ, সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।