ঢাকা ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::

সাবেক আওয়ামী এমপি ইলিয়াস মোল্লা মন্দির দখলের অভিযোগ

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ঢাকার মিরপুরে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার বিরুদ্ধে মন্দির দখলের অভিযোগ ওঠলো। আর এই অভিযোগ আনা হলো প্রকাশে সংবাদ সম্মেলন করে। হাসিনার শাসনামলে হিন্দু সম্প্রদায়ের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তার প্রমাণ রাজধানী ঢাকার পল্লবী এলাকায় শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল ও সেবায়েতদের মারধর করা।

কিন্তু প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও এর কোন সুরাহা পাননি সনাতনদর্শাবলম্বিরা। কেন? তারাও তো এদেশের নাগরিক। সাধারণ মানুষতো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছেন। বাংলাদেশের কোন সাধারণ মানুষের প্রতিতো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কোন অভিযোগ নেই।

হিন্দুদের সম্পত্তি দখল, ভয়ভীতি দেখানো সবই ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাশালী রাজনীতিকরা করে থাকে। মিরপুরের পল্লবীতে ইলিয়াস মোল্লা হাসিনার দলের সাবেক এমপি। তার মদতেই মন্দির দখল।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ এনে দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা অভিযোগে বলেন, ঢাকা-১৬ আসনের হাসিনার দলের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার ছত্রচ্ছায়ায় রাজধানীর পল্লবী এলাকায় শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল ও সেবায়েতদের মারধরের অভিযোগ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে মন্দিরের সেবায়েত ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার ছত্রছায়ায় সুধীর গং-এর সদস্যরা শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল ও ভক্তদেরসহ আমাকে নির্যাতন করে বের করে দিয়েছে। নানা সময়ে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে বলেও অভিযোগ করেন সুবেন্দু তালুকদার।

বের করে দেওয়ার পর সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থানা, জেলা প্রশাসক আর্মি দপ্তরসহ সর্বোচ্চ যোগাযোগ করেও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাবে মন্দিরটি ফিরে পেতে ব্যর্থ হন বলেও জানান তিনি।

মন্দিরের এই সেবায়েত বলেন, ২০১৩ সালের ২৫ মে বিগত মিরপুরের ক্যান্টনমেন্টস্থ ১২ নং চাকুলী মন্দির ও পূজা কমিটি মন্দিরটি পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে যথাযথ উন্নয়ন ও সুস্থ পরিচালনার জন্য অধ্যাপক ড. নির্মল কান্তি মিত্র, মিরপুর ডি ও এইচ এস সংলগ্ন অবসর প্রাপ্ত হিন্দু সেনা কর্মকর্তা ও জনসাধারণের বৈঠকের মাধ্যমে সরকারি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দালিলিক ভাবে আমাদের পরিচালনা কমিটির কাছে মন্দিরটি হস্তান্তর করেন।

এরপর জানা যায় মন্দিরের যে জায়গা আমাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে সেই দাগ নম্বরের জমি এটি নয়।

ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, পরে জমিসংক্রান্ত ঝামেলা মিটিয়ে মূল মন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার সহযোগিতায় সুধীর গং কর্তৃক মন্দির দখলের অপচেষ্টা শুরু করে। তারই ধারবাহিকতায় ২০১৮ সালে ইলিয়াস মোল্লা নিজে উপস্থিত থেকে সুধীর গং এর মাধ্যমে পূজার নামে হস্তান্তর করা অস্থায়ী মন্দিরে আমাকে ও আমার ভক্তদের মারধর করে এবং প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, আমি মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সহযোগিতায় স্থানীয় থানায় সুধীর গংদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি, সেই মামলা এখনো বিচারাধীন। চুক্তি অনুযায়ী মেট্রোরেল বরাদ্দকৃত জায়গায় মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় মন্দিরটি বেআইনি ভাবে দখল করে নেওয়া হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে সুধীরের দেওয়া মন্দির হস্তান্তরের জাল জালিয়াতির মামলাটি আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। পিবিআই তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে কোনো জালজালিয়াতি বা প্রতারণা হয়নি।

ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, আমরা চাই ইলিয়াস মোল্লাসহ সুধীর গংদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ভক্তদের জন্য মন্দির উন্মুক্ত করে প্রার্থনার সুযোগ করে দিয়ে সেবায়েত ও মন্দিরে থাকা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, ঢাকা প্রনবমঠ অধ্যক্ষ শ্রী গনেশ মহারাজ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালীপদ মজুমদার ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সাবেক আওয়ামী এমপি ইলিয়াস মোল্লা মন্দির দখলের অভিযোগ

আপডেট সময় : ১০:৪৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ঢাকার মিরপুরে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইলিয়াস মোল্লার বিরুদ্ধে মন্দির দখলের অভিযোগ ওঠলো। আর এই অভিযোগ আনা হলো প্রকাশে সংবাদ সম্মেলন করে। হাসিনার শাসনামলে হিন্দু সম্প্রদায়ের কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তার প্রমাণ রাজধানী ঢাকার পল্লবী এলাকায় শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল ও সেবায়েতদের মারধর করা।

কিন্তু প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও এর কোন সুরাহা পাননি সনাতনদর্শাবলম্বিরা। কেন? তারাও তো এদেশের নাগরিক। সাধারণ মানুষতো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছেন। বাংলাদেশের কোন সাধারণ মানুষের প্রতিতো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কোন অভিযোগ নেই।

হিন্দুদের সম্পত্তি দখল, ভয়ভীতি দেখানো সবই ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাশালী রাজনীতিকরা করে থাকে। মিরপুরের পল্লবীতে ইলিয়াস মোল্লা হাসিনার দলের সাবেক এমপি। তার মদতেই মন্দির দখল।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ এনে দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তারা অভিযোগে বলেন, ঢাকা-১৬ আসনের হাসিনার দলের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার ছত্রচ্ছায়ায় রাজধানীর পল্লবী এলাকায় শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল ও সেবায়েতদের মারধরের অভিযোগ করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে মন্দিরের সেবায়েত ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার ছত্রছায়ায় সুধীর গং-এর সদস্যরা শ্রীশ্রী গৌর নিতাই মন্দির দখল ও ভক্তদেরসহ আমাকে নির্যাতন করে বের করে দিয়েছে। নানা সময়ে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে বলেও অভিযোগ করেন সুবেন্দু তালুকদার।

বের করে দেওয়ার পর সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থানা, জেলা প্রশাসক আর্মি দপ্তরসহ সর্বোচ্চ যোগাযোগ করেও স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাবে মন্দিরটি ফিরে পেতে ব্যর্থ হন বলেও জানান তিনি।

মন্দিরের এই সেবায়েত বলেন, ২০১৩ সালের ২৫ মে বিগত মিরপুরের ক্যান্টনমেন্টস্থ ১২ নং চাকুলী মন্দির ও পূজা কমিটি মন্দিরটি পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে যথাযথ উন্নয়ন ও সুস্থ পরিচালনার জন্য অধ্যাপক ড. নির্মল কান্তি মিত্র, মিরপুর ডি ও এইচ এস সংলগ্ন অবসর প্রাপ্ত হিন্দু সেনা কর্মকর্তা ও জনসাধারণের বৈঠকের মাধ্যমে সরকারি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দালিলিক ভাবে আমাদের পরিচালনা কমিটির কাছে মন্দিরটি হস্তান্তর করেন।

এরপর জানা যায় মন্দিরের যে জায়গা আমাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে সেই দাগ নম্বরের জমি এটি নয়।

ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, পরে জমিসংক্রান্ত ঝামেলা মিটিয়ে মূল মন্দির নির্মাণ শুরু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার সহযোগিতায় সুধীর গং কর্তৃক মন্দির দখলের অপচেষ্টা শুরু করে। তারই ধারবাহিকতায় ২০১৮ সালে ইলিয়াস মোল্লা নিজে উপস্থিত থেকে সুধীর গং এর মাধ্যমে পূজার নামে হস্তান্তর করা অস্থায়ী মন্দিরে আমাকে ও আমার ভক্তদের মারধর করে এবং প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, আমি মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সহযোগিতায় স্থানীয় থানায় সুধীর গংদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি, সেই মামলা এখনো বিচারাধীন। চুক্তি অনুযায়ী মেট্রোরেল বরাদ্দকৃত জায়গায় মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন হলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় মন্দিরটি বেআইনি ভাবে দখল করে নেওয়া হয়।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে সুধীরের দেওয়া মন্দির হস্তান্তরের জাল জালিয়াতির মামলাটি আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। পিবিআই তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে কোনো জালজালিয়াতি বা প্রতারণা হয়নি।

ড. সুবেন্দু তালুকদার বলেন, আমরা চাই ইলিয়াস মোল্লাসহ সুধীর গংদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। ভক্তদের জন্য মন্দির উন্মুক্ত করে প্রার্থনার সুযোগ করে দিয়ে সেবায়েত ও মন্দিরে থাকা সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, ঢাকা প্রনবমঠ অধ্যক্ষ শ্রী গনেশ মহারাজ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালীপদ মজুমদার ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র সরকার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।