বেকারত্ব মোকাবেলায় শিক্ষা প্রযুক্তিতে সম্ভাবনার নতুন দিক প্রিয় শিক্ষালয়

- আপডেট সময় : ০৫:০৯:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫ ১৯ বার পড়া হয়েছে
সন্তানকে কোলে নিয়ে এক হাতে মোবাইল,অন্য হাতে বই। এভাবেই প্রতিদিন বেশ খানিকটা সময় পড়াশোনায় কাটান মনিরা ইয়াসমিন মুক্তা। পড়াশোনা শেষ করেছেন প্রায় দুই বছর আগে।কিন্তু ছোট সন্তান থাকার কারণে কোথাও গিয়ে কোচিং করে চাকরির প্রস্তুতি নেয়া তার জন্য ছিল অসম্ভব। যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রস্তুতির অভাবে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছিলেন না তিনি।ধীরে ধীরে হতাশা আর আত্মবিশ্বাসহীনতা গ্রাস করছিল মনিরাকে।ঠিক তখনই একদিন এক পরিচিতের কাছ থেকে জানতে পারেন প্রিয় শিক্ষালয়’অ্যাপ সম্পর্কে।তার কথাতেই গুগল প্লে-স্টোর থেকে priyoshikkhaloy লিখে সার্চ দিয়ে ইনস্টল করে নেয় অ্যাপটি।অ্যাপটি মোবাইলে ডাউনলোড করে প্রথমে কিছুটা দ্বিধায় থাকলেও ধীরে ধীরে সেটাই হয়ে উঠেছে এখন তার সবচেয়ে বড় ভরসার স্থল।এখন আর বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না,সন্তানকে সময় দিয়েও নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ প্রস্তুতি।আশা করছেন খুব শ্রীঘ্রই আসবে সফলতা,জানালেন মনিরা ইয়াসমিন মুক্তা।প্রায় একই গল্প অভিজিৎ-এরও। আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ভোটানিতে অভিজিৎ চক্রবর্তী পড়াশোনা শেষ করে পারিবারিক ব্যবসার দায়-দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।কোচিংয়ে ভর্তি হয়ে প্রস্তুতি নেয়ার সময় হয়ে উঠছিল না তার জন্য।ফেসবুকে একদিন চোখে পড়ে‘প্রিয় শিক্ষালয়’ অ্যাপের একটি বিজ্ঞাপন। ডাউনলোড করে পড়াশোনা শুরু করেন। আর শুধু এই অ্যাপ ব্যবহার করেই উত্তীর্ণ হন ১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায়,সুপারিশপ্রাপ্ত হন শিক্ষক হিসেবে।কৃতজ্ঞতা জানান ঘরে বসে নেয়া যায় প্রস্তুতির এমন প্লাটফর্মটির প্রতি।মনিরা কিংবা অভিজিৎ—এরা কেউ একা নন।এমনই হাজারো চাকরি প্রত্যাশী যারা পরিবার,সময় বা অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতায় প্রাতিষ্ঠানিক কোচিংয়ে যেতে পারেন না,তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে প্রিয় শিক্ষালয় নামের এই অ্যাপটি। ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত হওয়ার মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলেও অল্পদিনের ব্যবধানে জনপ্রিয় হয়ে উঠা এই অ্যাপটি ইতিমধ্যে গুগল প্লে-স্টোরে ১ লাখ ডাউনলোড অতিক্রম করেছে।দেশে বেকারত্বের সংকট মোকাবেলায় প্রযুক্তিনির্ভর এ উদ্যোগটি হয়ে উঠছে সম্ভাবনার এক নতুন দিক।এই প্লাটফর্ম থেকে উপকৃত হচ্ছে হাজার হাজার বেকার চাকরি প্রত্যাশী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুকরা। অন্যদিকে এই অ্যাপেই প্রস্তুতি নিয়ে ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়েছেন সামিউল,ইরা,আতিক , সাইদের মতো অসংখ্য অ্যাপ ব্যবহারকারীরা।শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়,অ্যাপটি কাজ করছে শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্যও একটি ভার্চুয়াল রিসোর্স সেন্টার হিসেবে। দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে চাকুরির প্রস্তুতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির বাংলা বিষয়টি পড়ান এক্স ঢাবিয়ান মো.আমিনুল ইসলাম ।
তিনি জানালেন,এই ধরণের অ্যাপ শুধু একজন চাকরি প্রত্যাশী নয়,বরং একটি সমাজকে প্রস্তুত করে তুলছে নতুন প্রতিযোগিতার জন্য। প্রযুক্তি যখন মানুষের হাতের মুঠোয়,তখন নিয়োগ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতিও আর শুধুমাত্র শহরের বিষয় নয় এখন একদম অজপাড়াঁ গ্রাম থেকেও সম্ভব।প্রিয় শিক্ষালয়’অ্যাপ তারই বাস্তব প্রমাণ।এ বিষয়ে প্রিয় শিক্ষালয়ের প্রধান নির্বাহী মহিউদ্দিন সোহেল জানালেন,একটি বিশ্বাসযোগ্য,তথ্যভিত্তিক ও যুগোপযোগী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রিয় শিক্ষালয় অ্যাপ যেন হয়ে উঠে বেকারবান্ধব সাশ্রয়ী প্রস্তুতির প্লাটফর্ম এমন লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি আমরা।শুধু কনটেন্ট নয়, একজন শিক্ষার্থীর প্রস্তুতি কোথায় দুর্বল,কী ভুল বেশি করছে—তাও বিশ্লেষণ করে এই অ্যাপটি।প্রতিটি পরীক্ষার শেষে ফলাফল বিশ্লেষণ,ভুল চিহ্নিতকরণ ও তুলনামূলক পারফরম্যান্স দেখানোর মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারী বুঝতে পারেন কোন বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।বর্তমানে অ্যাপটিতে বিসিএস,ব্যাংক,শিক্ষক নিবন্ধন,প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক,বিশ্ববিদ্যালয় ও নার্সিং ভর্তি,আইনজীবী এনরোলমেন্ট,নন-ক্যাডারসহ প্রায় সব বড় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির কনটেন্ট পাওয়া যাচ্ছে।এসব কনটেন্ট দেশের অভিজ্ঞ শিক্ষক ও বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে সফল ব্যক্তিদের দ্বারা যাচাই-বাছাই করা,যাতে শিক্ষার্থীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রস্তুতি নিতে পারে। ভবিষ্যতে অ্যাপে উন্নত ভিডিও কনটেন্ট,লাইভ ক্লাস ও অ্যাডাপটিভ লার্নিং সুবিধা যুক্ত করা হবে বলে আরোও জানালেন প্রতিষ্ঠানটির এই কর্মকর্তা।তথ্যমতে,গুগল প্লে-স্টোরে অ্যাপটির রেটিং রয়েছে ৪.৮ এবং কয়েক হাজার ব্যবহারকারী ইতিমধ্যে প্রশংসাসূচক রিভিউ দিয়েছেন।রিভিউতে তারা লিখেছেন,অ্যাপটি শুধু সময় বাঁচায় না,সঠিক দিকনির্দেশনাও দেয়। এই অ্যাপের মাধ্যমেই ইতোমধ্যে অনেকেই পেয়েছেন চাকরি,বদলে গেছে তাদের ভবিষ্যৎ। আগামীদিনগুলোতে যদি আপডেটের ধারাবাহিকতা ঠিক রেখে নতুন নতুন ফিচার এবং উদ্ভাবনের মধ্যদিয়ে দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল এ শিক্ষায় সম্পৃক্ত করা যায় তবে এটি হয়ে উঠবে চাকরি প্রত্যাশিদের এক নির্ভরযোগ্য সহযাত্রী এমনটাই মনে করেন চাকরি প্রত্যাশিরা।