গৌরীপুরে বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষ
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ বহিষ্কার ৪ নেতা
- আপডেট সময় : ১৭ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বিএনপির মনোনয়ন প্রদানকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইন ও আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এদিন রাতেই দলীয় অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট রহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণসহ আরও চার নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিস্কৃতরা অন্যরা হলেন- উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম খোকন, সদস্য মাসুদ পারভেজ কার্জন, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব সুজিত কুমার দাস ও যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান পলাশ। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের অভ্যন্তরে হামলা, সহিংসতা, রক্তপাত, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁদেরকে দলের প্রাথমিক পদসহ সকল পর্যায়ে সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার আগে গৌরীপুর সরকারি কলেজ হোস্টেল মাঠে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইনের সমাবেশ চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদের সদস্য তানজিন আহমেদ আবিদের মৃত্যু হয়। তিনি ময়মনসিংহ শহরের কৃষ্টপুর এলাকার দেওয়ান আবুল হোসেনের ছেলে। ঘটনারদিন ইকবাল হোসেইনের সমাবেশে যোগ দিতে গৌরীপুরে এসেছিলেন।
জানা গেছে- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেইনকে ময়মনসিংহ-৩ আসনে মনোনয়ন দেয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের সমর্থকরা ৬ দিন ধরে গৌরীপুরে বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। ঘটনারদিন বিকেলে গৌরীপুর পৌর শহরে কালীখলা এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে উপজেলা মহিলা দলের উদ্যোগে সমাবেশ চলছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ। সমাবেশ চলাকালে ইকবাল হোসেইন গ্রুপের সমর্থকরা ওই সমাবেশে হামলা করলে দু’পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ ঘটে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০-৬০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনার পর উভয় পক্ষ পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে একে অপরকে ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ বলেন- ঘটনারদিন বিকেল মহিলা দলের সমাবেশ চলাকালে ইকবাল হোসেইন গ্রুপের লোকজন অতর্কিতে হামলা চালান। সমাবেশের মঞ্চ, প্যান্ডেল ও চেয়ার ভাংচুর করে। এ হামলার আমার স্ত্রীসহ প্রায় ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী আহত হন। এদিকে ইকবাল হোসাইনের সমাবেশস্থলে হঠাৎ হৃদ ক্রিয়া যন্ত্র বন্ধ হয়ে যান ছাত্রদল সদস্য তানজিন আহমেদ আবিদ। এ মৃত্যুকে নিয়ে বর্তমানে অপপ্রচার চালাচ্ছেন ইকবাল হোসেইনের সমর্থকরা। তিনি নারী সমাবেশে এ হামলার ন্যাক্কারজনক হামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিচার দাবি করেন।
অপরদিকে ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল গ্রুপের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুল ইসলাম শহীদ বলেন- আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের সমর্থকরা তাদের মিছিল হামলা করে ২০-৩৯ নেতা-কর্মীকে আহত করে। পরে ইকবাল অনুসারী নেতা-কর্মীদের অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। এছাড়া ১১ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন তারা। হামলায় আহত ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের সদস্য তানজিন আহমেদ আবিদ মারা যান।
এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল ইসলাম শহীদ বলেন, মহিলা সমাবেশে কারা হামলা করেছে সেটা আমরা জানি না। সেই সময় আমরা মিটিংয়ে ছিলাম।
বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় গৌরীপুর শহরে বর্তমানে জনমনে আতঙ্কের পাশাপাশি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
















