ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পলাশবাড়ীতে ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ৪২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় Logo দখল আর দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে নওগাঁর ছোট যমুনা নদী Logo নওগাঁয় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ৬ জন হাসপাতালে ভর্তি Logo মহান স্বাধীনতা উপলক্ষে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার, হবিগঞ্জ Logo পাইকগাছায় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উপজেলা কৃষকদল সভাপতি’র পাল্টা সংবাদ সম্মেলন Logo খাগড়াছড়িতে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন  Logo গোলাপগঞ্জে সদর ইউনিয়নে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল Logo অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি পেলেন মাহবুব আলম Logo আওয়ামী লীগ নামে নতুন দল, ইসিতে আবেদন Logo বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নের কাঁটা হাসিনা

২শ’ ১২ বছর অতিক্রম করলো কাগমারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

সৈয়দ মাসুদুল হক টুকু, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:০৬:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪ ২৪৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম শিয়ালকোল। এক কালের স্রোতস্বিনী লৌহজং নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই জনপদটি দৈর্ঘ্যে তিন কিলোমিটার আর প্রসস্ত মাত্র এক কিলোমিটার। এর পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে লৌহজং নদী, ঠিক তেমনি এর পশ্চিম পাশ দিয়ে চলে গেছে ব্যস্ততম টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর আঞ্চলিক জেলা মহাসড়ক। সেই সাথে ভূঞাপুর থানার পূর্ব- দক্ষিণ সীমান্তবর্তী গ্রাম এই শিয়ালকোল।

কাগমারীপাড়া শিয়ালকোল পুখুরিয়া শিয়ালকোল মৌজায় রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক হাট ও দু’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কাগমারীপাড়া শিয়ালকোল মৌজায় রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

কাগমারীপাড়া নামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভূঞাপুর উপজেলার প্রথম বিদ্যাপিঠ। যা ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বর্তমানে ২ শত ১২ বছর অতিক্রম করছে। মোগল শাসনামলে সুন্দর নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে স্রোতস্বিনী লৌহজং নদী তীরের এই জায়গাটিতে শিয়াল সম্প্রদায়ের যোদ্ধারা ঘাটি স্থাপন করায় ধীরে ধীরে জায়গাটি শিয়ালকোল নাম ধারণ করাসহ হিন্দু বসতিপূর্ণ এই শিয়ালকোল হাটটি রাতারাতি প্রসিদ্ধ গরুর হাট ও পাট ব্যবসাসহ জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

আর নিত্যদিন বাজার বসায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে কাগমারীপাড়া বাজারটি। ১৯৪৭ খ্রিঃস্টাব্দে দেশ বিভাজনের পর সিংহভাগ হিন্দু ও মারোয়ারী সম্প্রদায়ের মহাজনেরা তল্পি-তল্পা গুছিয়ে ভারতে পাড়ি জমালেও অদ্যাবধি শিয়ালকোল হাট ও কাগমারীপাড়া বাজার তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত এই কাগমারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ মাত্র ১ একর ২২ শতাংশ। বর্তমানে এর রয়েছে শোভিত পাকা ভবন এবং স্বাস্থ্য সম্মত কক্ষ সমূহ ও সৌচাগার। পাঠাগারও
আছে। যাতে গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক বলে জানালেন প্রধান শিক্ষিকা দিলা আরা আফরুজ। শিক্ষার্থী সংখ্যা ১শ’ ৭২ জন। আছে একজন কর্মচারী।

পাঠদানে নিয়োজিত আছেন ৮ জন মানুষ তৈরির কারিগর। এর মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ পুরুষ আর বাকি ৭৫ শতাংশই নারী। প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে আছেন দিল আরা আফরুজ। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষকের মেয়ে ও আরেক শিক্ষকের পুত্রবধূ। সেই সাথে একজন স্বনামধন্য কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী। আর তাই দিল আরা আফরুজ আদর্শ শিক্ষিকা হবেন, এটাই স্বাভাবিক।

পাশাপাশি ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে যার নেতৃত্বে ভূঞাপুর স্বাধীন হয়েছিল সেই সমর নায়ক কোম্পানী কমান্ডার খন্দকার হাবিবুর রহমানের কন্যা জহুরা খাতুন পলি এই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। এটা নিঃসন্দেহে সবার জন্য খুশির খবর, তাতে সন্দেহ নেই। সেই সাথে আছেন দক্ষ অভিজ্ঞ আরও ৩ জন শিক্ষিকা ও ২ জন শিক্ষক। বাকী ১ জন নিয়ে আছে নানা কৌতহল।

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, আমাকে একজন ভালো মা দাও, আমি তোমাদের একটি সুন্দর জাতি উপহার দেব। সুন্দর জাতি গঠনে ভালো মা এর কোন বিকল্প নেই।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

২শ’ ১২ বছর অতিক্রম করলো কাগমারী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

আপডেট সময় : ০৪:০৬:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

 

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম শিয়ালকোল। এক কালের স্রোতস্বিনী লৌহজং নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই জনপদটি দৈর্ঘ্যে তিন কিলোমিটার আর প্রসস্ত মাত্র এক কিলোমিটার। এর পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে লৌহজং নদী, ঠিক তেমনি এর পশ্চিম পাশ দিয়ে চলে গেছে ব্যস্ততম টাঙ্গাইল-ভূঞাপুর আঞ্চলিক জেলা মহাসড়ক। সেই সাথে ভূঞাপুর থানার পূর্ব- দক্ষিণ সীমান্তবর্তী গ্রাম এই শিয়ালকোল।

কাগমারীপাড়া শিয়ালকোল পুখুরিয়া শিয়ালকোল মৌজায় রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক হাট ও দু’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং কাগমারীপাড়া শিয়ালকোল মৌজায় রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

কাগমারীপাড়া নামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভূঞাপুর উপজেলার প্রথম বিদ্যাপিঠ। যা ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বর্তমানে ২ শত ১২ বছর অতিক্রম করছে। মোগল শাসনামলে সুন্দর নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে স্রোতস্বিনী লৌহজং নদী তীরের এই জায়গাটিতে শিয়াল সম্প্রদায়ের যোদ্ধারা ঘাটি স্থাপন করায় ধীরে ধীরে জায়গাটি শিয়ালকোল নাম ধারণ করাসহ হিন্দু বসতিপূর্ণ এই শিয়ালকোল হাটটি রাতারাতি প্রসিদ্ধ গরুর হাট ও পাট ব্যবসাসহ জমজমাট ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

আর নিত্যদিন বাজার বসায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে কাগমারীপাড়া বাজারটি। ১৯৪৭ খ্রিঃস্টাব্দে দেশ বিভাজনের পর সিংহভাগ হিন্দু ও মারোয়ারী সম্প্রদায়ের মহাজনেরা তল্পি-তল্পা গুছিয়ে ভারতে পাড়ি জমালেও অদ্যাবধি শিয়ালকোল হাট ও কাগমারীপাড়া বাজার তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।

ব্রিটিশ শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত এই কাগমারীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ মাত্র ১ একর ২২ শতাংশ। বর্তমানে এর রয়েছে শোভিত পাকা ভবন এবং স্বাস্থ্য সম্মত কক্ষ সমূহ ও সৌচাগার। পাঠাগারও
আছে। যাতে গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতাধিক বলে জানালেন প্রধান শিক্ষিকা দিলা আরা আফরুজ। শিক্ষার্থী সংখ্যা ১শ’ ৭২ জন। আছে একজন কর্মচারী।

পাঠদানে নিয়োজিত আছেন ৮ জন মানুষ তৈরির কারিগর। এর মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ পুরুষ আর বাকি ৭৫ শতাংশই নারী। প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে আছেন দিল আরা আফরুজ। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষকের মেয়ে ও আরেক শিক্ষকের পুত্রবধূ। সেই সাথে একজন স্বনামধন্য কলেজ শিক্ষকের স্ত্রী। আর তাই দিল আরা আফরুজ আদর্শ শিক্ষিকা হবেন, এটাই স্বাভাবিক।

পাশাপাশি ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে যার নেতৃত্বে ভূঞাপুর স্বাধীন হয়েছিল সেই সমর নায়ক কোম্পানী কমান্ডার খন্দকার হাবিবুর রহমানের কন্যা জহুরা খাতুন পলি এই স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন। এটা নিঃসন্দেহে সবার জন্য খুশির খবর, তাতে সন্দেহ নেই। সেই সাথে আছেন দক্ষ অভিজ্ঞ আরও ৩ জন শিক্ষিকা ও ২ জন শিক্ষক। বাকী ১ জন নিয়ে আছে নানা কৌতহল।

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, আমাকে একজন ভালো মা দাও, আমি তোমাদের একটি সুন্দর জাতি উপহার দেব। সুন্দর জাতি গঠনে ভালো মা এর কোন বিকল্প নেই।