ঢাকা ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

উৎকণ্ঠিত দৃষ্টি এভারকেয়ারে

মহিউদ্দিন তুষার, সিনিয়র রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ৪২ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক স্বতন্ত্র পরিচয় রাখেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, কারাবরণ এবং দেশের জন্য ত্যাগ তার সুনামের মূল ভিত্তি। সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দল বা মতভেদের সীমা ছাড়িয়ে আজ তার সুস্থতার জন্য সারাদেশে দোয়া হচ্ছে। এর কারণ শুধু তার রাজনৈতিক পরিচয় নয়; বরং মানবিক ও জাতীয় স্বার্থে তার অবদানও বিশেষ।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে জীবন-মৃত্যুর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের জটিল সংক্রমণ এবং দীর্ঘদিনের শারীরিক নানা সমস্যার অবনতি হওয়ায় গত ২৩ নভেম্বর রাতেই জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, ফুসফুস-হৃদরোগ ছাড়াও কিডনি, লিভার ও ডায়াবেটিসসহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা মিলিয়ে তাঁর চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে।

তার চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি চীন থেকে পাঁচজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় এসে চিকিৎসক বোর্ডে যুক্ত হয়েছেন। শারীরিক অবস্থা অনুকূলে এলে তাঁকে বিদেশে নেওয়ার ব্যবস্থাও বিবেচনায় আছে বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। দেশের রাজনীতিতে চার দশকের বেশি সময় ধরে ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক এই নেত্রীর অসুস্থতায় দলমত নির্বিশেষে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী থেকে গ্রাম-সব জায়গায় চলছে দোয়া ও প্রার্থনা। রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হোক, মানবিকতার জায়গা থেকে সবাই আজ তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন। এ যেন এক নেত্রীর জীবন রক্ষায় গোটা জাতির একই স্রোতে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করার বিরল মুহূর্ত।

তাকে ২৩ নভেম্বর রাতে ফুসফুসে সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়া হন; ওই সংক্রমণ তার হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসে প্রভাব ফেলেছে বলে চিকিৎসকরা জানান। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, খালেদা জিয়ার ওপর ফুসফুস-হৃদরোগ। সঙ্গে বহুদিনের হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার সমস্যাসহ ডায়াবেটিসের মতো পুরনো জটিলতাও রয়েছে, যা চিকিৎসাকে জটিল করে তুলেছে। পরে মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। চিকিৎসা ত্বরান্বিত ও বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে সম্প্রতি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। প্রাথমিকভাবে চীনের পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ঢাকায় এসে চিকিৎসা-দলে যুক্ত হয়েছে, তারা স্থানীয় ডাক্তারদের সঙ্গে পর্যালোচনা ও চিকিৎসা পরিকল্পনায় অংশ নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শারীরিক অবস্থা অনুমতি দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথাও বিবেচনায় আনা হবে, তবে এখনই সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। চিকিৎসক ও পরিবার জনসাধারণকে অনুরোধ করেছেন গুজব ছড়াবেন না, হাসপাতালের পরিবেশ অরক্ষিত করবেন না এবং অফিসিয়াল আপডেটের জন্য অপেক্ষা করুন।

বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থার খবরে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা তার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন। বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বও তার সুস্থতা কামনা করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সবাই এই মুহূর্তে পার্থক্য ভুলে মানবিক সহমর্মার পরিচয় দেখাচ্ছেন। জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক মহল সংবাদমাধ্যমে জানাচ্ছে, তারা জাতীয় নেত্রীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া করছেন। এমনকি দেশের সাধারণ মানুষও তার সুস্থতার জন্য একযোগে প্রার্থনা করছেন। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল, প্রতিটি মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন হচ্ছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক শ্রেণি নির্বিশেষে মানুষ ঘরে বসে, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে প্রার্থনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রার্থনার ঢেউ শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি এক মানবিক এবং জাতীয় ঐক্যের প্রকাশ। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে সিসিইউতে, দেশি ও বিদেশি চিকিৎসকরা একসঙ্গে তার চিকিৎসা পরিচালনা করছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে দলের সিনিয়র নেতারা বলেছেন, তিনি বর্তমানে সিসিইউতে রয়েছেন এবং চিকিৎসক দলের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল সিদ্ধান্ত এখন সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসক বোর্ডের হাতে এবং দেশের ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সমন্বয় করে নেওয়া হচ্ছে। তারা বলছেন, দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে বিবেচনায় আনা হবে, তবে এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নেতারা দলীয় কর্মীদের ও সমর্থকদেরও অনুরোধ করেছেন হাসপাতালে ভিড় কমিয়ে রাখুন। তারা যোগ করেছেন, এই মুহূর্তে শুধু দোয়া ও সহমর্মিতা দেখানোই গুরুত্বপূর্ণ। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতার জন্য তারা প্রতিনিয়ত মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সমর্থন নিশ্চিত করছেন। দলের নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, দেশের মানুষও দোয়ায় এক হয়ে নেত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করবেন।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৮০-এর দশকে, যখন তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। একাধিক রাজনৈতিক সংকটে, দেশ ও দলের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় কারাবরণ এবং রাজনৈতিক চাপে থাকলেও তিনি দেশ ত্যাগ করেননি, যা তাকে দেশের জনগণের মনে আলাদা স্থান দিয়েছে। তার নেতৃত্ব শুধু দল বা সরকারে সীমাবদ্ধ নয়। দুর্যোগ, জাতীয় সংকট বা রাজনৈতিক অস্থিরতায় তিনি মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন। দলীয় ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সাধারণ মানুষ সকলেই আজ তার সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন। সামাজিক ও মানবিক দায়বোধের কারণে রাজনীতির পার্থক্য আপাতত ম্লান হয়ে গেছে।

বর্তমান সময়ে, ফুসফুস ও হৃদরোগসহ দীর্ঘদিনের জটিল স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ যত্ন নিচ্ছেন এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ দলও তার চিকিৎসায় অংশগ্রহণ করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ, সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা একমতভাবে প্রার্থনা করছেন, যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন। খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন, দেশ ও জনগণের জন্য অবদান এবং সংগ্রাম তাকে সাধারণ নেতার চেয়ে আলাদা এবং প্রভাবশালী করেছে। এজন্যই তার দ্রুত আরোগ্য নিশ্চিত করতে জাতি একসাথে প্রার্থনা করছে, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল এক মানবিক একতা প্রদর্শন করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

উৎকণ্ঠিত দৃষ্টি এভারকেয়ারে

আপডেট সময় :

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক স্বতন্ত্র পরিচয় রাখেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, কারাবরণ এবং দেশের জন্য ত্যাগ তার সুনামের মূল ভিত্তি। সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দল বা মতভেদের সীমা ছাড়িয়ে আজ তার সুস্থতার জন্য সারাদেশে দোয়া হচ্ছে। এর কারণ শুধু তার রাজনৈতিক পরিচয় নয়; বরং মানবিক ও জাতীয় স্বার্থে তার অবদানও বিশেষ।

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে জীবন-মৃত্যুর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের জটিল সংক্রমণ এবং দীর্ঘদিনের শারীরিক নানা সমস্যার অবনতি হওয়ায় গত ২৩ নভেম্বর রাতেই জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, ফুসফুস-হৃদরোগ ছাড়াও কিডনি, লিভার ও ডায়াবেটিসসহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা মিলিয়ে তাঁর চিকিৎসা অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে।

তার চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি চীন থেকে পাঁচজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় এসে চিকিৎসক বোর্ডে যুক্ত হয়েছেন। শারীরিক অবস্থা অনুকূলে এলে তাঁকে বিদেশে নেওয়ার ব্যবস্থাও বিবেচনায় আছে বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। দেশের রাজনীতিতে চার দশকের বেশি সময় ধরে ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক এই নেত্রীর অসুস্থতায় দলমত নির্বিশেষে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। রাজধানী থেকে গ্রাম-সব জায়গায় চলছে দোয়া ও প্রার্থনা। রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই হোক, মানবিকতার জায়গা থেকে সবাই আজ তাঁর দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন। এ যেন এক নেত্রীর জীবন রক্ষায় গোটা জাতির একই স্রোতে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করার বিরল মুহূর্ত।

তাকে ২৩ নভেম্বর রাতে ফুসফুসে সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়া হন; ওই সংক্রমণ তার হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসে প্রভাব ফেলেছে বলে চিকিৎসকরা জানান। প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, খালেদা জিয়ার ওপর ফুসফুস-হৃদরোগ। সঙ্গে বহুদিনের হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার সমস্যাসহ ডায়াবেটিসের মতো পুরনো জটিলতাও রয়েছে, যা চিকিৎসাকে জটিল করে তুলেছে। পরে মেডিকেল বোর্ড তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। চিকিৎসা ত্বরান্বিত ও বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে সম্প্রতি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। প্রাথমিকভাবে চীনের পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ঢাকায় এসে চিকিৎসা-দলে যুক্ত হয়েছে, তারা স্থানীয় ডাক্তারদের সঙ্গে পর্যালোচনা ও চিকিৎসা পরিকল্পনায় অংশ নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শারীরিক অবস্থা অনুমতি দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথাও বিবেচনায় আনা হবে, তবে এখনই সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। চিকিৎসক ও পরিবার জনসাধারণকে অনুরোধ করেছেন গুজব ছড়াবেন না, হাসপাতালের পরিবেশ অরক্ষিত করবেন না এবং অফিসিয়াল আপডেটের জন্য অপেক্ষা করুন।

বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থার খবরে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা তার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন। বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বও তার সুস্থতা কামনা করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সবাই এই মুহূর্তে পার্থক্য ভুলে মানবিক সহমর্মার পরিচয় দেখাচ্ছেন। জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক মহল সংবাদমাধ্যমে জানাচ্ছে, তারা জাতীয় নেত্রীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া করছেন। এমনকি দেশের সাধারণ মানুষও তার সুস্থতার জন্য একযোগে প্রার্থনা করছেন। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল, প্রতিটি মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন হচ্ছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক শ্রেণি নির্বিশেষে মানুষ ঘরে বসে, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে প্রার্থনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রার্থনার ঢেউ শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি এক মানবিক এবং জাতীয় ঐক্যের প্রকাশ। বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে সিসিইউতে, দেশি ও বিদেশি চিকিৎসকরা একসঙ্গে তার চিকিৎসা পরিচালনা করছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে দলের সিনিয়র নেতারা বলেছেন, তিনি বর্তমানে সিসিইউতে রয়েছেন এবং চিকিৎসক দলের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল সিদ্ধান্ত এখন সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসক বোর্ডের হাতে এবং দেশের ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সমন্বয় করে নেওয়া হচ্ছে। তারা বলছেন, দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে বিবেচনায় আনা হবে, তবে এ মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নেতারা দলীয় কর্মীদের ও সমর্থকদেরও অনুরোধ করেছেন হাসপাতালে ভিড় কমিয়ে রাখুন। তারা যোগ করেছেন, এই মুহূর্তে শুধু দোয়া ও সহমর্মিতা দেখানোই গুরুত্বপূর্ণ। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতার জন্য তারা প্রতিনিয়ত মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সমর্থন নিশ্চিত করছেন। দলের নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, দেশের মানুষও দোয়ায় এক হয়ে নেত্রীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করবেন।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৮০-এর দশকে, যখন তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। একাধিক রাজনৈতিক সংকটে, দেশ ও দলের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় কারাবরণ এবং রাজনৈতিক চাপে থাকলেও তিনি দেশ ত্যাগ করেননি, যা তাকে দেশের জনগণের মনে আলাদা স্থান দিয়েছে। তার নেতৃত্ব শুধু দল বা সরকারে সীমাবদ্ধ নয়। দুর্যোগ, জাতীয় সংকট বা রাজনৈতিক অস্থিরতায় তিনি মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন। দলীয় ও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সাধারণ মানুষ সকলেই আজ তার সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন। সামাজিক ও মানবিক দায়বোধের কারণে রাজনীতির পার্থক্য আপাতত ম্লান হয়ে গেছে।

বর্তমান সময়ে, ফুসফুস ও হৃদরোগসহ দীর্ঘদিনের জটিল স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ যত্ন নিচ্ছেন এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ দলও তার চিকিৎসায় অংশগ্রহণ করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ, সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা একমতভাবে প্রার্থনা করছেন, যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন। খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন, দেশ ও জনগণের জন্য অবদান এবং সংগ্রাম তাকে সাধারণ নেতার চেয়ে আলাদা এবং প্রভাবশালী করেছে। এজন্যই তার দ্রুত আরোগ্য নিশ্চিত করতে জাতি একসাথে প্রার্থনা করছে, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল এক মানবিক একতা প্রদর্শন করছে।