ঢাকা ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় আহত ৪৭

গাজার রাফাহ শহরের কাছে একটি বিতর্কিত নতুন বিতরণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৪৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জেনেভায় সাংবাদিকদের কাছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের ফিলিস্তিনবিষয়ক প্রধান আজিথ সংঘে বলেন, ঘটনার প্রাথমিক প্রমাণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিকেই দায়ী করছে।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফাহর কাছাকাছি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক সাংবাদিকসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, নতুন ত্রাণকেন্দ্রটির চারপাশে থাকা বেড়া উপড়ে ঢুকে পড়ে হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষ। সে সময় ইসরায়েলি ট্যাংক ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়।
ঘটনাস্থলে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামে একটি সংস্থা মাত্র একদিন আগে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রটি স্থাপন করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থিত এই সংস্থা গাজায় ত্রাণ বিতরণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করার কথা বলে। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা এই ব্যবস্থাকে অকার্যকর ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের আশঙ্কা, এ ব্যবস্থা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। জিএইচএফ জানিয়েছে, তারা চারটি বিতরণকেন্দ্র গড়ে তুলেছে, যার মধ্যে দুটি চালু হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোর চারপাশে সুরক্ষা বেড়া ও বালির বাঁধ থাকায় সেগুলোর চেহারা হয়ে উঠেছে ঘাঁটির মতো। সংস্থাটি দাবি করেছে, তাদের ভাড়া করা নিরাপত্তারক্ষীরা গুলি চালায়নি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু সময়ের জন্য তারা সরে গিয়েছিল।
জাতিসংঘসহ মানবিক সংস্থাগুলো এই বিতরণব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, এটি আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার পরিপন্থি এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের আশঙ্কা তৈরি করছে। ক্ষুধার্ত মানুষ ত্রাণের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের কাছে যেতে বাধ্য হলে তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাগুলো। ইসরায়েল দাবি করে, এই বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে হামাসের হাতে ত্রাণ যাওয়ার ঝুঁকি কমানো যাবে, যদিও বড় পরিসরে ত্রাণ অপব্যবহারের প্রমাণ এখনো তারা উপস্থাপন করতে পারেনি। অন্যদিকে জাতিসংঘ বলছে, ত্রাণের অপব্যবহার রোধে তাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাই যথেষ্ট। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পুরো গাজা উপত্যকা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এতটাই দুর্বিষহ যে, সামান্য ত্রাণের জন্যও হাজার হাজার মানুষ জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে বাধ্য হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি

আপডেট সময় : ০২:০৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় আহত ৪৭

গাজার রাফাহ শহরের কাছে একটি বিতর্কিত নতুন বিতরণকেন্দ্রে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৪৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জেনেভায় সাংবাদিকদের কাছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের ফিলিস্তিনবিষয়ক প্রধান আজিথ সংঘে বলেন, ঘটনার প্রাথমিক প্রমাণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিকেই দায়ী করছে।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফাহর কাছাকাছি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক সাংবাদিকসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, নতুন ত্রাণকেন্দ্রটির চারপাশে থাকা বেড়া উপড়ে ঢুকে পড়ে হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষ। সে সময় ইসরায়েলি ট্যাংক ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হয়।
ঘটনাস্থলে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামে একটি সংস্থা মাত্র একদিন আগে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রটি স্থাপন করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থিত এই সংস্থা গাজায় ত্রাণ বিতরণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করার কথা বলে। তবে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা এই ব্যবস্থাকে অকার্যকর ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের আশঙ্কা, এ ব্যবস্থা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে একটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। জিএইচএফ জানিয়েছে, তারা চারটি বিতরণকেন্দ্র গড়ে তুলেছে, যার মধ্যে দুটি চালু হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোর চারপাশে সুরক্ষা বেড়া ও বালির বাঁধ থাকায় সেগুলোর চেহারা হয়ে উঠেছে ঘাঁটির মতো। সংস্থাটি দাবি করেছে, তাদের ভাড়া করা নিরাপত্তারক্ষীরা গুলি চালায়নি। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু সময়ের জন্য তারা সরে গিয়েছিল।
জাতিসংঘসহ মানবিক সংস্থাগুলো এই বিতরণব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, এটি আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার পরিপন্থি এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের আশঙ্কা তৈরি করছে। ক্ষুধার্ত মানুষ ত্রাণের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের কাছে যেতে বাধ্য হলে তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাগুলো। ইসরায়েল দাবি করে, এই বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে হামাসের হাতে ত্রাণ যাওয়ার ঝুঁকি কমানো যাবে, যদিও বড় পরিসরে ত্রাণ অপব্যবহারের প্রমাণ এখনো তারা উপস্থাপন করতে পারেনি। অন্যদিকে জাতিসংঘ বলছে, ত্রাণের অপব্যবহার রোধে তাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাই যথেষ্ট। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পুরো গাজা উপত্যকা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এতটাই দুর্বিষহ যে, সামান্য ত্রাণের জন্যও হাজার হাজার মানুষ জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে বাধ্য হচ্ছে।