ঢাকা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

বিএনপির দুঃসময়ের সাথীকে পেয়ে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

নড়িয়া-সখিপুরে গণসংবর্ধনায় সিক্ত শফিকুর রহমান কিরণ

মহিউদ্দিন তুষার
  • আপডেট সময় : ২৯৩ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান কিরণকে ঘিরে গতকাল শনিবার নড়িয়া ও সখিপুরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। শন পাওয়ার পর নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানার দুই প্রান্তে হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক তার প্রতি শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন। ফুলের মালা, শ্লোগান আর আনন্দ মিছিলে সকালে নড়িয়া থেকে শুরু হয়ে সখিপুর থানায় শেষ হয় কিরণের সম্মানে আয়োজিত এই গণসংবর্ধনা।

সকালে নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নড়িয়া থানা চত্বরে সমবেত হন। সেখানেই শফিকুর রহমান কিরণকে প্রথম পর্যায়ের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ গাড়িবহর ও শ্লোগানে সড়কজুড়ে তৈরি হয় এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ। সন্ধায় সখিপুর থানা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় দফা সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে রাত ১০ টায় শেষ হয় কর্মসূচি।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, নড়িয়া-সখিপুর এলাকায় দীর্ঘদিন পর এমন বড় রাজনৈতিক সমাবেশ দেখা গেল। মনোনয়ন পাওয়ার পর মাঠের কর্মীরা নতুন উদ্দীপনা পেয়েছেন, যা তাদের আগাম রাজনীতিতে আরও সক্রিয় করবে বলে মনে করেন অনেকে।

শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, আমি নড়িয়া-সখিপুরবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত, প্রতিহিংসা রাজনীতি নয় ভালোবাসার রাজনীতি বিশ্বাস করি। আমি সুখে-দুঃখে সবসময় আপনাদের পাশে ছিলাম। যতদিন বেঁচে থাকি, আপনাদের সাথেই থাকব।

দলীয় নেতাকর্মীদের অতীত দুর্ভোগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমাদের অনেক নেতাকর্মী জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ ঘরে ফিরতে পারেননি, কেউ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আমরা সেসব খারাপ সময় ভুলে যেতে চাই। বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আমরা সব দলের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।

তার বক্তব্যে ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে সতর্কতা ও দলীয় ঐক্যের আহ্বান স্পষ্ট ছিল। তিনি বলেন, নড়িয়া-সখিপুরবাসীর আস্থা ও প্রত্যাশা পূরণ করাই হবে তার প্রধান লক্ষ্য।

নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, দুঃসময়ের ভরসা ছিলেন কিরণ। কিরণের মনোনয়ন স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন গতি এনেছে। তারা দাবি করেন, দুঃসময়ে দল বিপর্যস্ত থাকলেও তিনি এলাকার নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

স্থানীয় এক যুবদল নেতা বলেন, কিরণ ভাই আমাদের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন। তিনি সবসময় মাঠে থেকেছেন-ধর্মঘট হোক, আন্দোলন হোক কিংবা কোনো মামলা-হামলা। ছাত্রদলের এক নেতার মতে, কিরণের জনসম্পৃক্ততা এবং এলাকায় তার গ্রহণযোগ্যতা মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

সিনিয়র নেতারা বলেন, নড়িয়া-সখিপুরের মানুষের সাথে তার যোগাযোগ খুব গভীর। উন্নয়নমূলক কাজেও তিনি সক্রিয় ছিলেন।

শরীয়তপুর-২ আসনটি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে শফিকুর রহমান কিরণের মনোনয়নকে দলীয় নেতাকর্মীরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে তার ‘দুঃসময়ে সাহসী ভূমিকা’ তাকে এলাকার জনপ্রিয় নেতাদের তালিকায় আরও দৃঢ় করেছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।

আগামী নির্বাচনে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। কিরণের গণসংবর্ধনাকে তাই অনেকে নির্বাচনী প্রচারণার সূচনা হিসেবে দেখছেন।

গণসংবর্ধনার পুরো আয়োজন থেকেই স্পষ্ট হয়েছে, নড়িয়া-সখিপুরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে আগ্রহী ও উদ্দীপ্ত। শফিকুর রহমান কিরণ সামনের দিনে সুসংগঠিত প্রচারণা এবং দলের ঐক্য ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বারবার বলেন, সবাইকে নিয়ে এগোতে চাই। নিজের উন্নয়ন নয়, এলাকার উন্নয়নই আমার রাজনীতি।

গণসংবর্ধনার এই মহাসমাবেশ শেষ হলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নড়িয়া-সখিপুরে রাজনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। দুই থানার হাজারো উপস্থিত মানুষের উচ্ছ্বাস প্রার্থী কিরণের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে-এমনটাই প্রতীয়মান।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিএনপির দুঃসময়ের সাথীকে পেয়ে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

নড়িয়া-সখিপুরে গণসংবর্ধনায় সিক্ত শফিকুর রহমান কিরণ

আপডেট সময় :

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর) আসনে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান কিরণকে ঘিরে গতকাল শনিবার নড়িয়া ও সখিপুরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। শন পাওয়ার পর নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানার দুই প্রান্তে হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক তার প্রতি শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন। ফুলের মালা, শ্লোগান আর আনন্দ মিছিলে সকালে নড়িয়া থেকে শুরু হয়ে সখিপুর থানায় শেষ হয় কিরণের সম্মানে আয়োজিত এই গণসংবর্ধনা।

সকালে নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে নড়িয়া থানা চত্বরে সমবেত হন। সেখানেই শফিকুর রহমান কিরণকে প্রথম পর্যায়ের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ গাড়িবহর ও শ্লোগানে সড়কজুড়ে তৈরি হয় এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ। সন্ধায় সখিপুর থানা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় দফা সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে রাত ১০ টায় শেষ হয় কর্মসূচি।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, নড়িয়া-সখিপুর এলাকায় দীর্ঘদিন পর এমন বড় রাজনৈতিক সমাবেশ দেখা গেল। মনোনয়ন পাওয়ার পর মাঠের কর্মীরা নতুন উদ্দীপনা পেয়েছেন, যা তাদের আগাম রাজনীতিতে আরও সক্রিয় করবে বলে মনে করেন অনেকে।

শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, আমি নড়িয়া-সখিপুরবাসীর ভালোবাসায় সিক্ত, প্রতিহিংসা রাজনীতি নয় ভালোবাসার রাজনীতি বিশ্বাস করি। আমি সুখে-দুঃখে সবসময় আপনাদের পাশে ছিলাম। যতদিন বেঁচে থাকি, আপনাদের সাথেই থাকব।

দলীয় নেতাকর্মীদের অতীত দুর্ভোগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আমাদের অনেক নেতাকর্মী জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কেউ কেউ ঘরে ফিরতে পারেননি, কেউ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। আমরা সেসব খারাপ সময় ভুলে যেতে চাই। বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আমরা সব দলের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।

তার বক্তব্যে ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে সতর্কতা ও দলীয় ঐক্যের আহ্বান স্পষ্ট ছিল। তিনি বলেন, নড়িয়া-সখিপুরবাসীর আস্থা ও প্রত্যাশা পূরণ করাই হবে তার প্রধান লক্ষ্য।

নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, দুঃসময়ের ভরসা ছিলেন কিরণ। কিরণের মনোনয়ন স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন গতি এনেছে। তারা দাবি করেন, দুঃসময়ে দল বিপর্যস্ত থাকলেও তিনি এলাকার নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

স্থানীয় এক যুবদল নেতা বলেন, কিরণ ভাই আমাদের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন। তিনি সবসময় মাঠে থেকেছেন-ধর্মঘট হোক, আন্দোলন হোক কিংবা কোনো মামলা-হামলা। ছাত্রদলের এক নেতার মতে, কিরণের জনসম্পৃক্ততা এবং এলাকায় তার গ্রহণযোগ্যতা মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

সিনিয়র নেতারা বলেন, নড়িয়া-সখিপুরের মানুষের সাথে তার যোগাযোগ খুব গভীর। উন্নয়নমূলক কাজেও তিনি সক্রিয় ছিলেন।

শরীয়তপুর-২ আসনটি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে শফিকুর রহমান কিরণের মনোনয়নকে দলীয় নেতাকর্মীরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে তার ‘দুঃসময়ে সাহসী ভূমিকা’ তাকে এলাকার জনপ্রিয় নেতাদের তালিকায় আরও দৃঢ় করেছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।

আগামী নির্বাচনে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। কিরণের গণসংবর্ধনাকে তাই অনেকে নির্বাচনী প্রচারণার সূচনা হিসেবে দেখছেন।

গণসংবর্ধনার পুরো আয়োজন থেকেই স্পষ্ট হয়েছে, নড়িয়া-সখিপুরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে আগ্রহী ও উদ্দীপ্ত। শফিকুর রহমান কিরণ সামনের দিনে সুসংগঠিত প্রচারণা এবং দলের ঐক্য ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বারবার বলেন, সবাইকে নিয়ে এগোতে চাই। নিজের উন্নয়ন নয়, এলাকার উন্নয়নই আমার রাজনীতি।

গণসংবর্ধনার এই মহাসমাবেশ শেষ হলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নড়িয়া-সখিপুরে রাজনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। দুই থানার হাজারো উপস্থিত মানুষের উচ্ছ্বাস প্রার্থী কিরণের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে-এমনটাই প্রতীয়মান।