ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo রাজধানীতে আসছে উত্তরাঞ্চলের মৌসুমি কসাই Logo জমে উঠছে রাজধানীর পশুরহাট ব্যাপারীরা ক্রেতার অপেক্ষায় Logo ভোগান্তিহীন স্বস্তির ঈদযাত্রা ঢাকার ভেতরেই যত বিড়ম্বনা Logo কালীগঞ্জে ৩ হাজার ২শত কৃষককে দেওয়া হল বিনামূল্যে সার ও বীজ Logo খাতের সফল খামারি উদ্যোক্তাদের মাঝে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান Logo কাজী মামুনুর রশীদ কচি সদস্য হওয়াতে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা Logo মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে জাতীয় ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা Logo ইসলামপুর ইউনিয়নে ঈদের চাল নিয়ে পরিষদ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগ Logo মর্গ্যান স্কুলের দুর্নীতির তদন্তে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধর, ৬ শিক্ষকের নামে মামলা Logo মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের জেলা কর্মশালা অনুষ্ঠিত 

জাবিতে বন্ধ ক্যাম্পাসে গাছ কাটার মহোৎসব

জাবি প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:৪৭:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪ ৪২৩ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

 

জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুলো মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের বর্ধিতাংশ ও চারুকলা বিভাগের ভবন নির্মাণ ছোট বড় সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ক্যাম্পস প্রায় জনমানব শূন্য।

রোববার (২ জুন) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আল বেরুনী হলের এক্সটেনশন অংশে কতিপয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়।

এনিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ছুটি হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার নতুন সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শিক্ষার্থীরা হলে নেই এই সুযোগে গাছ কাটার উৎসবে মেতেছেন তারা। চারুকলা ভবন নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের বিভাগের শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

 

ভবন নির্মাণে আমাদের আপত্তি নেই, আপত্তি সঠিক মাস্টার প্ল্যান ছাড়া ভবন নির্মাণ করা। প্রশাসন বার বার ছুটি বা বন্ধে গাছ কেটে নিজেদের মধ্যকার ক্রুটিগুলোকেই সামনে নিয়ে আসছে। সঠিক সিদ্ধান্ত ছাড়া ভবন নির্মাণ সামগ্রিকভাবেই আমাদের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ভবন নির্মাণে অতিরিক্ত জায়গার গাছ কাটা হয়েছে।

গাঠ কাটার বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খোন্দকার লুৎফুল এলাহী বলেন, এভাবে ছুটির মধ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগে ভবন নির্মাণ করা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। তারা বারবার এমন কাজটি করছেন। (কলা ও মানবিক অনুষদ) আমাদের চাওয়া ছিল ভবনটি আমাদের বর্তমান ভবন সংলগ্ন স্থানে করার।

তাতে ভবন কিছুটা ছোট হলেও পরিবেশ ও প্রাণ প্রকৃতিতে ক্ষতি তেমন ক্ষতি হতো না। কিন্তু তারা সে কথায় কর্ণপাত না করে লেকের পাশে যে স্থান নির্ধারণ করেছে, তাতে অনেক গাছ কাটা পড়বে বলে আমরা আশংকা করেছি। এবং সেই আশংকা সত্যি হয়েছে। পরিকল্পনা ছাড়া এ ধরনের ভবন নির্মাণ অত্যন্ত ক্ষতিকর পরিবেশের জন্য। এই ভবনটি নির্মানের মাধ্যমে তারা তাদের তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পথকে সুগম করল।

প্রকল্প পরিচালক ও চারুকলা ভবনের সহোযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্ধারিত জায়গাতেই ভবন নির্মাণ করছি। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কিছুই আমরা করছি না। এছাড়া যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেই গাছগুলো আমরা নিজেরাই রোপন করে পরিচর্যা করব। সকল অংশীজনদের সুপারিশকে গ্রহণ করে এবং তাদের নিয়ে আমরা একটা টিম তৈরি করব, যাতে তারা আমাদের অগ্রগতিতে লক্ষ্য রাখতে পারেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগকে অনুষদে রূপান্তরিত করতে চান বিভাগীয় শিক্ষকরা। এ লক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে অনুষদ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যার জন্য আল বেরুণী হলের বর্ধিতাংশের স্থানটি নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা বাংলাদেশ সরকার ও বাকী ৫০ কোটি টাকা ভারত সরকার অর্থায়ন করবে।

গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন কলা ভবনের বর্ধিতাংশ ও চারুকলা বিভাগের ভবন নির্মাণের জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একাংশ।

রোববার (২ জুন) বেলা সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন গাছ কাটার স্থানে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমনের সঞ্চালনায় অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানানো হয়। এসময় বর্তমান প্রশাসনের সেচ্ছাচারিতা উল্লেখ্য করে তাদের ব্যার্থতা বর্ণনা ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়াই গাছ কাটার প্রতিবাদ জানান ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জাবিতে বন্ধ ক্যাম্পাসে গাছ কাটার মহোৎসব

আপডেট সময় : ১১:৪৭:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪

 

 

জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুলো মূল্যবান গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের বর্ধিতাংশ ও চারুকলা বিভাগের ভবন নির্মাণ ছোট বড় সবমিলিয়ে প্রায় ৫০০ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ক্যাম্পস প্রায় জনমানব শূন্য।

রোববার (২ জুন) সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আল বেরুনী হলের এক্সটেনশন অংশে কতিপয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়।

এনিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ছুটি হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার নতুন সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শিক্ষার্থীরা হলে নেই এই সুযোগে গাছ কাটার উৎসবে মেতেছেন তারা। চারুকলা ভবন নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের বিভাগের শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

 

ভবন নির্মাণে আমাদের আপত্তি নেই, আপত্তি সঠিক মাস্টার প্ল্যান ছাড়া ভবন নির্মাণ করা। প্রশাসন বার বার ছুটি বা বন্ধে গাছ কেটে নিজেদের মধ্যকার ক্রুটিগুলোকেই সামনে নিয়ে আসছে। সঠিক সিদ্ধান্ত ছাড়া ভবন নির্মাণ সামগ্রিকভাবেই আমাদের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। ভবন নির্মাণে অতিরিক্ত জায়গার গাছ কাটা হয়েছে।

গাঠ কাটার বিষয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খোন্দকার লুৎফুল এলাহী বলেন, এভাবে ছুটির মধ্যে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগে ভবন নির্মাণ করা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। তারা বারবার এমন কাজটি করছেন। (কলা ও মানবিক অনুষদ) আমাদের চাওয়া ছিল ভবনটি আমাদের বর্তমান ভবন সংলগ্ন স্থানে করার।

তাতে ভবন কিছুটা ছোট হলেও পরিবেশ ও প্রাণ প্রকৃতিতে ক্ষতি তেমন ক্ষতি হতো না। কিন্তু তারা সে কথায় কর্ণপাত না করে লেকের পাশে যে স্থান নির্ধারণ করেছে, তাতে অনেক গাছ কাটা পড়বে বলে আমরা আশংকা করেছি। এবং সেই আশংকা সত্যি হয়েছে। পরিকল্পনা ছাড়া এ ধরনের ভবন নির্মাণ অত্যন্ত ক্ষতিকর পরিবেশের জন্য। এই ভবনটি নির্মানের মাধ্যমে তারা তাদের তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পথকে সুগম করল।

প্রকল্প পরিচালক ও চারুকলা ভবনের সহোযোগী অধ্যাপক এম এম ময়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্ধারিত জায়গাতেই ভবন নির্মাণ করছি। পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কিছুই আমরা করছি না। এছাড়া যে গাছগুলো কাটা হয়েছে সেই গাছগুলো আমরা নিজেরাই রোপন করে পরিচর্যা করব। সকল অংশীজনদের সুপারিশকে গ্রহণ করে এবং তাদের নিয়ে আমরা একটা টিম তৈরি করব, যাতে তারা আমাদের অগ্রগতিতে লক্ষ্য রাখতে পারেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগকে অনুষদে রূপান্তরিত করতে চান বিভাগীয় শিক্ষকরা। এ লক্ষ্যে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে অনুষদ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যার জন্য আল বেরুণী হলের বর্ধিতাংশের স্থানটি নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণের জন্য ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার ৪৭ কোটি ৮৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা বাংলাদেশ সরকার ও বাকী ৫০ কোটি টাকা ভারত সরকার অর্থায়ন করবে।

গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন কলা ভবনের বর্ধিতাংশ ও চারুকলা বিভাগের ভবন নির্মাণের জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একাংশ।

রোববার (২ জুন) বেলা সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন গাছ কাটার স্থানে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমনের সঞ্চালনায় অপরিকল্পিতভাবে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানানো হয়। এসময় বর্তমান প্রশাসনের সেচ্ছাচারিতা উল্লেখ্য করে তাদের ব্যার্থতা বর্ণনা ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়াই গাছ কাটার প্রতিবাদ জানান ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।