ঢাকা ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জাকসুতে ৪০ ঘণ্টার নাটকীয়তা Logo কাশিয়ানীতে যুবকের মরদেহ উদ্ধার Logo মহেশখালীতে হত্যা চেষ্টা ও ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার ৭ আসামি গ্রেপ্তার Logo ইসলামপুরে মিথ্যাচার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Logo সালথা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি নাহিদ সাধারণ সম্পাদক সাইফুল Logo কালীগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির মতবিনিময় সভা Logo রুপগঞ্জে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ দুই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড Logo বাগেরহাটে বিআরটিসি গাড়ির অবৈধ কাউন্টার ও মহাসড়কে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন, করিমন বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Logo জামালপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশ ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বড়াইগ্রাম শাখা অফিস শুভ উদ্বোধন

কে এই মুক্তা রায়: আয়া থেকে কোটিপতি

গণমুক্তি ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

স্বামীর মৃতের পর অহসায় হয়ে পড়েন মুক্তা রায়। চাচাতো ভাই দুলাল তাকে আয়া পদে চাকরি দেন সিভিল সার্জন অফিসে। সে সময় সখ্য গড়ে ওঠে সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মুক্তা রায়কে।

চার বছর পর চাকরি ছাড়েন। এরপর মুক্তা রায় থেকে হয়ে ওঠেন মন্ত্রী-এমপির কথিত দ্বিতীয় বউ মুক্তা সেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা সেন। কোর্টে মুহুরি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তার স্বামী। যা আয় হতো তা দিয়ে সংসারে সবসময় ছিল টানাপোড়েন। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আয়া পদে চাকরি নিয়েছিলেন তিনি।

এ পর্যায়ে আয়ার চাকরি ছেড়ে নজর দেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালের কেনাকাটা, খাবার, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া শুরু করেন। তারপর থেকে হাসপাতালের সব নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র হয়ে ওঠেন হাসপাতালের রানি মুক্তা সেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাট, কার রেন্ট-এর শো-রুম, ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের ইসলামবাগে দুই তলা বাড়ি, শান্তিনগরে দুই জায়গায় প্লট আকারে ৫ শতক করে জমি, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলএসডি গোডাউনের পাশে ১০ শতক জমি, পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের পাশে থ্রিপিএম রেস্টুরেন্ট মালিকও এই মুক্তা।

সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাদুপাড়ায় বাড়ি-জমি ও সয়াবিন তেলের কারখানা, চন্ডীপুরে জমিসহ বাড়ি, মিল-চাতাল ও পুকুর, আবাদি জমি রয়েছে ২০ বিঘা। সদরের গড়েয়া বাসস্ট্যান্ডে ৮ শতক জমির ওপরে বাড়ি। এ ছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্য, জমি দখলসহ নামেবেনামে সম্পত্তি ও বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন।

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের নওগাঁর অটো রাইস মিল কয়েক কোটি টাকায় কিনেছেন এই মুক্তা সেন। চলতি বছরে মুক্তা সেনের দুই ছেলে তূর্য ও মাধুর্য এন্টারপ্রাইজ নামে পূবালী ব্যাংক হিসাব নম্বরে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৩৮ লাখ ২০৯৯ টাকা।

সাবেক মন্ত্রী ও এমপি রমেশ চন্দ্র সেন আটক হওয়ার পরদিন সব টাকা তুলে নেওয়ার পর বর্তমানে তার হিসাবে রয়েছে ৬ হাজার ৪১৭ টাকা। এ ছাড়াও জনতা, অগ্রণী ও সোনালী ব্যাংকেও তাদের হিসাব নম্বরে দুই বছরে লেনদেন রয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সবাই তাকে এমপির দ্বিতীয় বউ হিসেবে চিনতাম। এ বিষয়ে মুক্তারানি জানান, রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে তার একটা ভালো সম্পর্ক ছিল, সেটা সত্যি। কিন্তু আমি ব্যবসা-বাণিজ্য করে টাকা উপার্জন করেছি।

সরকারি কর প্রদান করি প্রতি বছরই। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে তা সত্য নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক তাহসীন মুনাবীল হক বলেন, আয়বহির্ভূত সম্পদ উপার্জনের কোনো সুযোগ নেই। কেউ এসবে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লিখিত অভিযোগ করলে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কে এই মুক্তা রায়: আয়া থেকে কোটিপতি

আপডেট সময় :

 

স্বামীর মৃতের পর অহসায় হয়ে পড়েন মুক্তা রায়। চাচাতো ভাই দুলাল তাকে আয়া পদে চাকরি দেন সিভিল সার্জন অফিসে। সে সময় সখ্য গড়ে ওঠে সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি মুক্তা রায়কে।

চার বছর পর চাকরি ছাড়েন। এরপর মুক্তা রায় থেকে হয়ে ওঠেন মন্ত্রী-এমপির কথিত দ্বিতীয় বউ মুক্তা সেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের চন্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা সেন। কোর্টে মুহুরি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তার স্বামী। যা আয় হতো তা দিয়ে সংসারে সবসময় ছিল টানাপোড়েন। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আয়া পদে চাকরি নিয়েছিলেন তিনি।

এ পর্যায়ে আয়ার চাকরি ছেড়ে নজর দেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাসপাতালের কেনাকাটা, খাবার, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া শুরু করেন। তারপর থেকে হাসপাতালের সব নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র হয়ে ওঠেন হাসপাতালের রানি মুক্তা সেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাট, কার রেন্ট-এর শো-রুম, ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের ইসলামবাগে দুই তলা বাড়ি, শান্তিনগরে দুই জায়গায় প্লট আকারে ৫ শতক করে জমি, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলএসডি গোডাউনের পাশে ১০ শতক জমি, পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের পাশে থ্রিপিএম রেস্টুরেন্ট মালিকও এই মুক্তা।

সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বাদুপাড়ায় বাড়ি-জমি ও সয়াবিন তেলের কারখানা, চন্ডীপুরে জমিসহ বাড়ি, মিল-চাতাল ও পুকুর, আবাদি জমি রয়েছে ২০ বিঘা। সদরের গড়েয়া বাসস্ট্যান্ডে ৮ শতক জমির ওপরে বাড়ি। এ ছাড়াও নিয়োগ বাণিজ্য, জমি দখলসহ নামেবেনামে সম্পত্তি ও বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন।

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের নওগাঁর অটো রাইস মিল কয়েক কোটি টাকায় কিনেছেন এই মুক্তা সেন। চলতি বছরে মুক্তা সেনের দুই ছেলে তূর্য ও মাধুর্য এন্টারপ্রাইজ নামে পূবালী ব্যাংক হিসাব নম্বরে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৩৮ লাখ ২০৯৯ টাকা।

সাবেক মন্ত্রী ও এমপি রমেশ চন্দ্র সেন আটক হওয়ার পরদিন সব টাকা তুলে নেওয়ার পর বর্তমানে তার হিসাবে রয়েছে ৬ হাজার ৪১৭ টাকা। এ ছাড়াও জনতা, অগ্রণী ও সোনালী ব্যাংকেও তাদের হিসাব নম্বরে দুই বছরে লেনদেন রয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সবাই তাকে এমপির দ্বিতীয় বউ হিসেবে চিনতাম। এ বিষয়ে মুক্তারানি জানান, রমেশ চন্দ্র সেনের সঙ্গে তার একটা ভালো সম্পর্ক ছিল, সেটা সত্যি। কিন্তু আমি ব্যবসা-বাণিজ্য করে টাকা উপার্জন করেছি।

সরকারি কর প্রদান করি প্রতি বছরই। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে তা সত্য নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক তাহসীন মুনাবীল হক বলেন, আয়বহির্ভূত সম্পদ উপার্জনের কোনো সুযোগ নেই। কেউ এসবে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লিখিত অভিযোগ করলে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।