দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না
- আপডেট সময় : ১১:০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
দেশের আকাশ থেকে এখনো কালো মেঘের ঘনঘটা কেটে যায়নি, শকুনির শ্যান দৃষ্টি এখনো তৎপর রয়েছে; তাই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষা এবং সুশাসন ও ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে আরো বড় ধরনের ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, রমনায় সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমী আব্দুর রহমান মূসা।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী তার লেখনী ও তাফসির মাহফিলের মাধ্যমে আমৃত্যু দ্বীনের খেদমত করে গেছেন। কিন্তু জুলুমবাজ ও ফ্যাসিবাদী সরকার তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা দিয়ে তাকে কারারুদ্ধ করেছে।
তারা দেশকে মেধা ও নেতৃত্বশূন্য করার জন্যই কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে প্রহসন করে শীর্ষ ১১ জন জাতীয় নেতা ও বরেণ্য আলেমদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। তারা পাঁচজন নেতাকে প্রহসনের বিচারের নামে ফাঁসিতে হত্যা ও আরো পাঁচজন নেতাকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। এখানেই শেষ নয় বরং জামায়াতকে ধ্বংস করার জন্য শত শত নেতাকে হত্যা করেছে।
পঙ্গু করেছে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে। তারা অন্য বিরোধী দলের ওপরও নির্মম দমন-পীড়ন চালিয়েছে। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু জুলমবাজ ও ফ্যাসিবাদীদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-জনতার তোপের মুখে তাদের লজ্জাজনক ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।
পরিষদের মহানগরী আহ্বায়ক প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
সমাবেশে পেশাজীবীদের মধ্যে বক্তব্য দেন, প্রফেসর ড. আব্দুল হান্নান, ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান, সাবেক জাজ অ্যাডভোকেট তাহা মোল্লাহ, কর্নেল (অব.) ডা. জিহাদ খান, ইঞ্জিনিয়ার মিসবাহ উদ্দীন খান, ওবাইদুর রহমান, ড. মুফতি মাওলানা আবুল কালাম আযাদ বাশার, মোহাম্মদ মাসুদ কবির।
উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড.মাওলানা আবুল ইহসান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান সিদ্দীক, মহানগরী প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার, ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল, কৃষিবিদ শেখ মুহাম্মদ মাসউদ, অ্যাডভোকেট মাঈনুদ্দীন, শিল্পী আবিদুর রহমান, সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
জাময়াতের আমীর বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনে দিশেহারা হয়ে জামায়াত নিষিদ্ধ করেছিল। তারা জামায়াতের ওপর দায় চাপিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু আমরা সে পাতানো ফাঁদে পা দেইনি। ফলে আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের বিজয় দান করেছেন। সব ষড়যন্ত্রের জাল ভেদ করে মাত্র ২৬ দিনের মাথায় আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি।
তিনি ছাত্র-জনতার ত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, সাম্প্রতিক সফল আন্দোলনে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হাজার হাজার আহত হয়েছেন। অনেকে অন্ধত্বের শিকার হয়েছেন। এসব বীর সংগ্রামীরা আমাদের আমানত। তাই যেকোনো সমস্যায় আমাদের সম্মিলিতভাবে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং বিজয়ীদের মোবারকবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব অনেক। তারা আওয়ামী-বাকশালীদের হাত থেকে একটি বিধ্বস্ত দেশ পেয়েছেন। তাই দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সংশোধনে সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে। আর দেশের মানুষ জাস্টিস চায়। দেশে জাস্টিস প্রতিষ্ঠা করা না গেলে স্বাধীনতা কখনো অর্থবহ হয়ে উঠবে না বা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করা যাবে না।