পিটিয়ে হত্যার জেরে খাগড়া ছড়িতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মৃত ৩
- আপডেট সময় : ০৪:৩৯:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮৪ বার পড়া হয়েছে
হঠাৎ কেন অশান্ত পাহাড়। এর পেছনে কোন ষড়যন্ত্র নেই তো? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। অনেকে মনে করেন, ৫ আগস্টের পর দেশজুড়ে পরিস্থিতি যখন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসছে, ঠিক সেই সময় পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে এমন ঘটনা স্বাভাবিক নয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের তথ্যানুসন্ধান দল যখন ঢাকায় অবস্থান করছে, ঠিক সেই সময় পাহাড়ে অশান্তির ঘটনা ঘটলো।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করে শনিবার শাহবাগে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে। সংগঠনটি সাম্প্রদায়িক হামলার বিষয়টি তদন্ত দলকে দেখাতে চায়। সংবাদ সম্মেলনে একটি মনগড়া বক্তব্য পেশ করে। যা নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে সঠিক জবাব দিতে পারেনি।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাহাড়ি-বাঙালির সংঘর্ষের জের ধরে জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রাতের গোলাগুলি ও বিকালের সংঘর্ষের ঘটনায় তিন জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
পিটিয়ে হত্যার জেরে ঘটনার সূত্রপাত
জানা গেছে, গত বুধবার মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মামুন (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুন মারা যান। তিনি সদর উপজেলার বাসিন্দা। ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে দীঘিনালা লারমা স্কয়ার এলাকায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ বাধে।
মিছিলে পাহাড়িদের বাধা
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় পাহাড়িরা মিছিলে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তখন সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। একপর্যায়ে পাহাড়ি ও বাঙালিদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে শতাধিক দোকান পুড়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে শহরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রাতভর সেখানে আতঙ্ক বিরাজ করে।
মৃত তিনজন হচ্ছে, জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)। আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। তাদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আহসান হাবিব পলাশ সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পার্বত্য অঞ্চল খাগড়াছড়ির উত্তেজনা ছড়িয়েছে পাশের জেলা রাঙামাটিতেও। জেলা শহরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হামলা-সংঘর্ষের
একজন নিহত ও কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাতে গোলাগুলি হয়েছে। এ পর্যন্ত তিন জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ১০-১২ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থল দীঘিনালায় যাচ্ছেন। সেখানে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।