ভান্ডারিয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাখ টাকার মালামাল চুরি গ্রেফতার ১
- আপডেট সময় : ০৭:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃক্ষপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে হাসপাতালের কমপাউন্ড থেকে একের পর এক মূল্যবান মালামাল চুরি হচ্ছে। করোনাকালীন দক্ষিণাঞ্চলে এক মাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় দুই কোটি টাকা দিয়ে হাসপাতালের সেন্টার অক্সিজেন প্লানের স্থানপনকের সেবা দিয়েছিলে স্বাস্থ্য বিভাগ।
কিন্তু করোনার পরে ভান্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চতুর্থ তলায় কক্ষগুলো ফাঁকা পড়ে থাকায় সেখানে মাদক সেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়। একারনে চতুর্থতলা অরক্ষিত থাকায় একের পর এক হাসপাতালে অক্সিজেন পাইপ, মিটার, ফ্যান এমনকি বাথরুমের কল খুলে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ অপরাধীরা। বিষয়টি দীর্ঘদিন পর কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। হাসাপতালে সিসি ক্যামেরাগুলো চালু না থাকায় সেখানে অপরাধীদের আনাগোনা অনেকটা নিয়মে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে ঘুওে জানা যায়, গত কয়েক মাস থেকে চোরদের উৎপাত বেড়েছে। অধিকাংশ সময় এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের খোয়া যাচ্ছে টাকা, মোবাইল ফোন, ওষুধ সামগ্রীসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। বাদ যায়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ, ফ্যান ও জেনারেটরের ব্যাটারীসহ মূলবান যন্ত্রপাতি।
গত ৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ চুরি করার সময় জাহাঙ্গীর মীর (৩০) নামের এক যুবকে হাতেনাতে আটক করেছে জনতা। আটকৃত জাহাঙ্গীর উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দ আঃ ছত্তারের পুত্র। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
নাইটগার্ড সোহাগ জানায়, শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে দোতালার লাইট বন্ধ দেখে আমি সেখানে যাই। যেয়ে দেখি অন্ধকারে একজন লোক সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করছে। আমি এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইবারসহ অনেকে ডেকে নিয়ে চোরকে আটক করি। এসময় তার সঙ্গে থাকা ব্যাগে সেলাই রেন্জ, প্লাসসহ পাই কাটার বিভিন্ন সরঞ্জম পাওয়া যায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকে নিয়ে যান।
স্থানীয়দের অভিযোগ একজন চোর ধরলেও চক্রের অন্য সদস্যরা রয়ে গেছে ধরাছোয়ার বাইরে। মানুষের জীবন রক্ষাকারী সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ চুরি হচ্ছে। এতে করে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অক্সিজেন সংকট দেখা দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মচারি জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র হাসপাতাল থেকে অক্সিজেনসহ বৈদ্যুতিক পাখা, পানির কল, ইলেকট্রিকের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় জেনারেটর রুম থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা দামের একটি ব্যাটারি চুরি হয়ে যায়। এই চুরির বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এমনকি সিসিটিভি ক্যামেরাও মনিটরিং করছে না। যার ফলে বেড়েছে চোর চক্রের উৎপাত। এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই দায়ী ।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কামাল হোসেন বলেন, ২২ জুলাই সন্ধ্যায় জেনারেটর রুম থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা দামের একটি ব্যাটারি চুরি হয়, আমি বাদী হয়ে ভান্ডারিয়া থানায় মামলা দায়ের করি।
চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বর্নালী দেবনাথ জানান, আমার পক্ষে হাসপাতালে আসা সবার ব্যাগ তল্লাশি করা সম্ভব নয়। তবে ৫ অক্টোবর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের পাইপ চুরি করার সময় একজনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ৩১শষ্যার হাসপতালের জনবল দিয়ে চলছে ১০০ শষ্যার হাসপাতাল। কিন্তু ১০০ শষ্যায় যে জনবল প্রয়োজন তা কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়নি। ৩১ শষ্যার জন বল দিয়ে ১০০ শষ্যা চালানো খুবই কষ্ট কর। পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দিতেও হিসিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন কুমার মন্ডল জানান, চুরির ঘটনায় পূর্বে একটি মামলা ছিল। সেই মামলায় জাহাঙ্গীর মীর নামের একজনকে গ্রেফতার করে কোর্ট প্রেরন করা হয়েছে। এর সাথে যেই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।