ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২৮:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ১৯ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু নারীকে নারকীয়ভাবে নির্যাতন ও ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার সাথে সম্পৃক্তদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার জেলা শহরের ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখা এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলার সভাপতি পরমানন্দ দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সাধারণ সমপাদক অ্যাড. নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, মাসুদা আক্তার, ছাত্রফ্রন্টের জেলা সভাপতি কলি রানী বর্মন, কামরম্নল হাসান বসুনিয়া, জয়নুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।

বক্তারা বলেন, ” গত ২৬ জুন কুমিলস্নার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে এক হিন্দু নারীকে যেভাবে গণধর্ষণ, নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে প্রচার করা হয়েছে তা কোন সভ্য সমাজে চলতে পারে না। নারীকে সমাজে নিকৃষ্টভাবে উপস্থাপন করে বাসত্মবে মানব সভ্যতাকেই অপমান করা হয়েছে। একটা সমাজের গনতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা কতটুকু ভংগুর তা এই ঘটনায় বুঝা যায়। অতীতে আমরা দেখেছি ধর্ষণ গণধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার হয়নি। ধর্ষকরা ক্ষমতার ছত্রছায়ায় নিরাপদে থেকেছে। গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে শত সহস্র রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার ব্যতিক্রম হবে এটাই সবার চাওয়া ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের বীরত্বপূর্ণ ভুমিকা অনস্বীকার্য। কিন’ গত ১১ মাস ধরে আমরা দেখছি নারীকে নানাভাবে নিপীড়ন করা হচ্ছে। সাইবার বুলিং, মব, ধর্ষণ-গণধর্ষণ, নারীকে নানাভাবে আক্রমণ, অশস্নীল গালিগালাজ, হেনস্থা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নারী নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় কোন দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ আমরা দেখছি না।

একটি অপরাধের বিচার না হলে শত অপরাধ জন্ম নেয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময়েও আমরা দেখেছি নৌকা মার্কায় ভোট না দেয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে লোমহর্ষক ধর্ষণ, এমসি কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোর দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তি হয়নি। অনত্মর্বর্তীকালীন সরকার নিজেদের নারীবান্ধব ঘোষণা করেছেন, কিন’ এই সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়ায় সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ঘরে-বাইরে নারীসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা দিতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে আরও কার্যকর ভুমিকা নিতে হবে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ধর্ষক গণপিটুনিতে মৃত্যু বরন করে এর মধ্যে দিয়ে বোঝা যায় যে মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস না থাকার কারনে এধরণের ঘটনা ঘটছে। এর জন্য মুলত বিচারহীনতার সংস্কৃতি দায়ী। পাশাপাশি সকল গণতন্ত্রমনা মানুষকে নারী নিপীড়ক-ধর্ষকদের বিরুদ্ধে গনআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৪:২৮:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু নারীকে নারকীয়ভাবে নির্যাতন ও ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার সাথে সম্পৃক্তদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার জেলা শহরের ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখা এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলার সভাপতি পরমানন্দ দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সাধারণ সমপাদক অ্যাড. নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, মাসুদা আক্তার, ছাত্রফ্রন্টের জেলা সভাপতি কলি রানী বর্মন, কামরম্নল হাসান বসুনিয়া, জয়নুল ইসলামসহ অন্যান্যরা।

বক্তারা বলেন, ” গত ২৬ জুন কুমিলস্নার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে এক হিন্দু নারীকে যেভাবে গণধর্ষণ, নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে প্রচার করা হয়েছে তা কোন সভ্য সমাজে চলতে পারে না। নারীকে সমাজে নিকৃষ্টভাবে উপস্থাপন করে বাসত্মবে মানব সভ্যতাকেই অপমান করা হয়েছে। একটা সমাজের গনতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা কতটুকু ভংগুর তা এই ঘটনায় বুঝা যায়। অতীতে আমরা দেখেছি ধর্ষণ গণধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার হয়নি। ধর্ষকরা ক্ষমতার ছত্রছায়ায় নিরাপদে থেকেছে। গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে শত সহস্র রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার ব্যতিক্রম হবে এটাই সবার চাওয়া ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের বীরত্বপূর্ণ ভুমিকা অনস্বীকার্য। কিন’ গত ১১ মাস ধরে আমরা দেখছি নারীকে নানাভাবে নিপীড়ন করা হচ্ছে। সাইবার বুলিং, মব, ধর্ষণ-গণধর্ষণ, নারীকে নানাভাবে আক্রমণ, অশস্নীল গালিগালাজ, হেনস্থা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নারী নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় কোন দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ আমরা দেখছি না।

একটি অপরাধের বিচার না হলে শত অপরাধ জন্ম নেয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সময়েও আমরা দেখেছি নৌকা মার্কায় ভোট না দেয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে লোমহর্ষক ধর্ষণ, এমসি কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোর দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তি হয়নি। অনত্মর্বর্তীকালীন সরকার নিজেদের নারীবান্ধব ঘোষণা করেছেন, কিন’ এই সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়ায় সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ঘরে-বাইরে নারীসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা দিতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে আরও কার্যকর ভুমিকা নিতে হবে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ধর্ষক গণপিটুনিতে মৃত্যু বরন করে এর মধ্যে দিয়ে বোঝা যায় যে মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস না থাকার কারনে এধরণের ঘটনা ঘটছে। এর জন্য মুলত বিচারহীনতার সংস্কৃতি দায়ী। পাশাপাশি সকল গণতন্ত্রমনা মানুষকে নারী নিপীড়ক-ধর্ষকদের বিরুদ্ধে গনআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।