ঢাকা ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মেধা বিকাশে পুষ্টির বিকল্প নাই Logo প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিএফডিসি রেডি টু কুক ফিশ ও মিল্কিং মেশিন হস্তান্তর Logo দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাতে বদলে যাবে রাজশাহী:খায়রুজ্জামান লিটন Logo প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠক Logo চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিধ্বস্ত Logo কক্সবাজার সদর উপজেলায় নুরুল আবছার চেয়ারম্যান নির্বাচিত Logo ভেদরগঞ্জ গুলফাম নড়িয়ায় ইসমাইল উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত Logo ভোট কেন্দ্রে ভিমরুলের আক্রমণ পুলিশ, আনসার ও শিশুসহ আহত ৫০ Logo বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে আমরা রবীন্দ্রনাথের কাছে ঋণী Logo দিনাজপুরে ৩২ হাজার ১১৭ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

গোলার শব্দে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ঘুম ভেঙেছে * নতুন আতঙ্ক

কাঁপছে সীমান্তের ঘরবাড়ি

গণমুক্তি রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১২:৪৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১১৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে থেমে থেমে মিয়ানমার সীমান্তে বড় ধরনের গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। টেকনাফে শব্দের আতঙ্কে বাংলাদেশের অনেকের ঘুম ভেঙেছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বশিপাড়ায় গোলার বিকট শব্দ হচ্ছে। যার কারণে ঘরবাড়ি কাঁপছে। অনেক সময় মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে।’ এমন অবস্থায় সীমান্তে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল-গোলায় কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদ সীমান্ত। ওপারের মর্টার শেলে এপারের বাড়িঘর কাঁপছে। এতে সীমান্তের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন সীমান্তে ভারী মর্টার শেলের শব্দ পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। মর্টার শেলের আঘাতে এপারের সীমান্তে লোকজনের বাড়িঘর কাঁপছে।
সীমান্ত উপজেলায় হ্নীলা থেকে দমদমিয়ার ৮, ৯ ও ১০ নম্বর পিলার এবং সাবরাংয়ের ৩-৭ নম্বর পিলারের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও জান্তা সরকারের মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল, গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফের হ্নীলা, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন।

টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির খবর পেয়েছি। ফলে আমরা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ-সেন্টমার্টিনসহ সীমান্তে টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি নজরদারি বাড়িয়েছি। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের মাধ্যমে শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে হেলিকপ্টার ওড়ার খবর পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘সীমান্তের ওপারের গ্রামগুলোতে দেশটির জান্তা সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। দুপক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে। এতে সীমান্তে থাকা বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। তবে সীমান্তে আমাদের বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে।’
সীমান্তে নজর রাখেন এমন এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘টেকনাফ সীমান্তের ওপারে জান্তা সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাড়ছে। এতে সীমান্তের লোকজনের মধ্যে ভয় কাজ করছে। সকালে মর্টার শেলের ভারী শব্দে ঘুম ভেঙে গেছে। মনে হচ্ছে আমাদের অফিসের ছাদের ওপর পড়েছে। কারণ ওপারের বিকট শব্দে এপারে ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠছে।’

সীমান্তের মানুষজন বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত চলছিল। মাঝপথে বন্ধ হলেও গত সপ্তাহ ধরে সীমান্তের জনপদ আবারও অশান্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা, সাবরাং ও সেন্টমার্টিনে নাফ নদের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে প্রতিদিনই গোলাগুলি-মর্টার শেলের শব্দ পাচ্ছে সীমান্তের লোকজন। তবে প্রায় সময় হ্নীলার জাদিমুড়া, দমদমিয়া, মৌলভীবাজার, ফুলের ডেইল সাবরাংয়ের নয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, নাজিরপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, দক্ষিণ জালিয়াপাড়া এলাকার নাফ নদের সীমান্তে থেমে থেমে ভারী গুলিবর্ষণের বিকট শব্দ শুনতে পান তারা।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দারা বলেন, ‘ভোর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষে গোলাগুলির বিকট শব্দ পাচ্ছি। দ্বীপের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। এর আগে কখনও সীমান্তে এভাবে গোলার শব্দ শোনা যায়নি। ওপারের গোলার আঘাতে এপারের ঘরবাড়ি কাঁপছে। এখন পর্যন্ত নতুন কোনও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেনি তবে নতুনভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা বেশি।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপে বসবাসকারী মো. ইসহাক বলেন, ‘ভারী মর্টার শেল ও গুলিবর্ষণ হচ্ছে ভোর থেকে। এতে দ্বীপের ভবনগুলো কাঁপছে। এমন শব্দ আগে কখনও পাইনি। দ্বীপবাসী এসব বিকট শব্দে ভয় পাচ্ছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ওপারে গোলার শব্দ আমার বাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গোলার শব্দে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে ঘুম ভেঙেছে * নতুন আতঙ্ক

কাঁপছে সীমান্তের ঘরবাড়ি

আপডেট সময় : ১২:৪৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে থেমে থেমে মিয়ানমার সীমান্তে বড় ধরনের গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। টেকনাফে শব্দের আতঙ্কে বাংলাদেশের অনেকের ঘুম ভেঙেছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের বশিপাড়ায় গোলার বিকট শব্দ হচ্ছে। যার কারণে ঘরবাড়ি কাঁপছে। অনেক সময় মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে।’ এমন অবস্থায় সীমান্তে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল-গোলায় কাঁপছে কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদ সীমান্ত। ওপারের মর্টার শেলে এপারের বাড়িঘর কাঁপছে। এতে সীমান্তের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর পৌনে ২টা পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা, সাবরাং ও সেন্টমার্টিন সীমান্তে ভারী মর্টার শেলের শব্দ পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। মর্টার শেলের আঘাতে এপারের সীমান্তে লোকজনের বাড়িঘর কাঁপছে।
সীমান্ত উপজেলায় হ্নীলা থেকে দমদমিয়ার ৮, ৯ ও ১০ নম্বর পিলার এবং সাবরাংয়ের ৩-৭ নম্বর পিলারের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও জান্তা সরকারের মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল, গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফের হ্নীলা, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন।

টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলির খবর পেয়েছি। ফলে আমরা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ-সেন্টমার্টিনসহ সীমান্তে টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি নজরদারি বাড়িয়েছি। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার স্থানীয়দের মাধ্যমে শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে হেলিকপ্টার ওড়ার খবর পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘সীমান্তের ওপারের গ্রামগুলোতে দেশটির জান্তা সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। দুপক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে। এতে সীমান্তে থাকা বাড়িঘর কেঁপে উঠছে। তবে সীমান্তে আমাদের বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে।’
সীমান্তে নজর রাখেন এমন এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘টেকনাফ সীমান্তের ওপারে জান্তা সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাড়ছে। এতে সীমান্তের লোকজনের মধ্যে ভয় কাজ করছে। সকালে মর্টার শেলের ভারী শব্দে ঘুম ভেঙে গেছে। মনে হচ্ছে আমাদের অফিসের ছাদের ওপর পড়েছে। কারণ ওপারের বিকট শব্দে এপারে ভূমিকম্পের মতো কেঁপে উঠছে।’

সীমান্তের মানুষজন বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত চলছিল। মাঝপথে বন্ধ হলেও গত সপ্তাহ ধরে সীমান্তের জনপদ আবারও অশান্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা, সাবরাং ও সেন্টমার্টিনে নাফ নদের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে প্রতিদিনই গোলাগুলি-মর্টার শেলের শব্দ পাচ্ছে সীমান্তের লোকজন। তবে প্রায় সময় হ্নীলার জাদিমুড়া, দমদমিয়া, মৌলভীবাজার, ফুলের ডেইল সাবরাংয়ের নয়াপাড়া, মৌলভীপাড়া, নাজিরপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, দক্ষিণ জালিয়াপাড়া এলাকার নাফ নদের সীমান্তে থেমে থেমে ভারী গুলিবর্ষণের বিকট শব্দ শুনতে পান তারা।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দারা বলেন, ‘ভোর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘর্ষে গোলাগুলির বিকট শব্দ পাচ্ছি। দ্বীপের সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। এর আগে কখনও সীমান্তে এভাবে গোলার শব্দ শোনা যায়নি। ওপারের গোলার আঘাতে এপারের ঘরবাড়ি কাঁপছে। এখন পর্যন্ত নতুন কোনও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেনি তবে নতুনভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা বেশি।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপে বসবাসকারী মো. ইসহাক বলেন, ‘ভারী মর্টার শেল ও গুলিবর্ষণ হচ্ছে ভোর থেকে। এতে দ্বীপের ভবনগুলো কাঁপছে। এমন শব্দ আগে কখনও পাইনি। দ্বীপবাসী এসব বিকট শব্দে ভয় পাচ্ছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ওপারে গোলার শব্দ আমার বাড়ি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।