ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পাইকগাছায় বেগম রোকেয়া দিবসে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা প্রদান  Logo ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বলেছে বাংলাদেশ Logo অন্তর্বর্তী সকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী ভারত Logo আমলারা বহুরূপী হয়ে সামনে আসেন বলেন: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য Logo ইইউ’র ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে ঢাকায় স্থানান্তরের অনুরোধ Logo ডিআরইউর সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও ইসি সদস্যকে ক্র্যাবের সংবর্ধনা Logo রাজনৈতিক পরিচয়ে ১৫ বছরে ৯০ হাজার পুলিশ নিয়োগ: ডিএমপি কমিশনার Logo বাণিজ্য বন্ধ করলে ভারত দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে পারবে না: গয়েশ্বর Logo শেরপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত Logo ভান্ডারিয়ায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি প্রতিরোধ দিবস পালিত

হাসিনার ঋণ বিলাস: রেখে গেছেন ১০ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক গনমুক্তি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

চলতি বছরের জুন মাসের শেষ নাগাদ বিদেশি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। মার্চ মাস শেষে ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। যা তিন মাসে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

 

গণমুক্তি রিপোর্ট

অর্থনীতি, সামাজিক, অবকাঠামো সর্বত্রই পুকুর চুরির ঘটনা। কেরাণী থেকে আমলা অনিয়ম-দর্নীতির প্রতিযোগিতা। অনিয়ম-উশৃঙ্খলতা, দলীয়করনের মোড়কে দুর্নীতিবাজ, মিথ্যাবাদী, চাঁদাবাজ, দালালী, ডলার-টাকা পাচার, শেয়ার বাজার কারসাজি ইত্যাদির মাধ্যমে কিভাবে একটা দেশ ও মানুষকে সুকৌশলী নষ্ট করে দিয়েছে শেখ হাসিনা, তারই প্রমান কুমিরের পিঠের মতো ভেসে ওঠছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ১০ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ রেখে গেছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশের কেন্দীয় ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে হাসিনার সরকারের পতন না হলে, গণতন্ত্রের লেবাসে দেশের মানুষকে মিথ্যার বাণী শুনতে হতো। শপথ নিয়ে কিভাবে একটি সম্ভবনাময় দেশ এবং দেশের মানুষ, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিংখাত ধ্বংস করে দিয়েছে, আর সেই ক্ষত বহন করছে বাংলাদেশ। এই অপরাধে শেখ হাসিনা বিচার দাবি করছে সাধারণ মানুষ।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রতিবেদনে হাসিনার ঋণবিলাস

চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বিদেশি ঋণের মোট পরিমাণ ১০৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন (১০ হাজার ৩৭৯ কোটি) ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্রতি ডলার ১২০ টাকা হারে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। যার ৮৩.২১ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ, প্রায় ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা সরকারের নেওয়া। তাতে সরকারের নিজস্ব, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সরকারি সংস্থার ঋণ রয়েছে। বাকি ঋণের দায় বেসরকারি খাতের।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বেশি হারে সুদ ও কঠিন শর্তে নেওয়া এসব ঋণ সরকারি সংস্থাগুলোর দেওয়া পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে।

৫০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ হাতে নিয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮-০৯ সালে সরকারের বিদেশি ঋণ ৫০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বিগত ১৫ বছর ৮ মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। এটা হাসিনার ঋণ বিলাসের রেকর্ড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে সরকার ও বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন (৯ হাজার ৯৩ কোটি) ডলার। অর্থাৎ তিন মাসেই প্রায় ৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ নিয়েছে হাসিনা সরকার।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাবেক সরকারের যথাযথ ঋণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় দেশি উৎস থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নেওয়া হয়েছে। যদিও বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশি ঋণ নেওয়াকে সবসময় স্বাগত জানান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। গত ১৫ বছরে অনেক বিদেশি ঋণও নেওয়া হয়েছে। তবে এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয়েছে দর-কষাকষি ও বাছবিচারহীনভাবে; যা সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট তৈরি হওয়ায় মার্কিন সুদের হার বৃদ্ধি পায়, যার প্রভাবে বিদেশি ঋণের সুদের হারও বাড়ে। পাশাপাশি দেশের টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের ফলে বিপাকে পড়ে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ নেওয়া ব্যবসায়ীরা। এজন্য বিদেশি ঋণ নেওয়ার চেয়ে পরিশোধে মনোযোগী হয় তারা। কিন্তু ডলারের দর অস্থিতিশীল হওয়া ও দেশে ঋণে সুদের হার বাড়তে থাকায় বিদ্যমান পরিস্থিতির মধ্যেই ফের বিদেশি ঋণ নিতে শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। এমন বিশ্লেষণই করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার যে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত করেছে কিংবা বাস্তবায়ন করছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর। মূলত এই মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়েই বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

হাসিনার ঋণ বিলাস: রেখে গেছেন ১০ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ

আপডেট সময় : ০৮:০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

চলতি বছরের জুন মাসের শেষ নাগাদ বিদেশি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। মার্চ মাস শেষে ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। যা তিন মাসে ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক

 

গণমুক্তি রিপোর্ট

অর্থনীতি, সামাজিক, অবকাঠামো সর্বত্রই পুকুর চুরির ঘটনা। কেরাণী থেকে আমলা অনিয়ম-দর্নীতির প্রতিযোগিতা। অনিয়ম-উশৃঙ্খলতা, দলীয়করনের মোড়কে দুর্নীতিবাজ, মিথ্যাবাদী, চাঁদাবাজ, দালালী, ডলার-টাকা পাচার, শেয়ার বাজার কারসাজি ইত্যাদির মাধ্যমে কিভাবে একটা দেশ ও মানুষকে সুকৌশলী নষ্ট করে দিয়েছে শেখ হাসিনা, তারই প্রমান কুমিরের পিঠের মতো ভেসে ওঠছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ১০ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ রেখে গেছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশের কেন্দীয় ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে হাসিনার সরকারের পতন না হলে, গণতন্ত্রের লেবাসে দেশের মানুষকে মিথ্যার বাণী শুনতে হতো। শপথ নিয়ে কিভাবে একটি সম্ভবনাময় দেশ এবং দেশের মানুষ, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিংখাত ধ্বংস করে দিয়েছে, আর সেই ক্ষত বহন করছে বাংলাদেশ। এই অপরাধে শেখ হাসিনা বিচার দাবি করছে সাধারণ মানুষ।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রতিবেদনে হাসিনার ঋণবিলাস

চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে বিদেশি ঋণের মোট পরিমাণ ১০৩ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন (১০ হাজার ৩৭৯ কোটি) ডলারে দাঁড়িয়েছে। প্রতি ডলার ১২০ টাকা হারে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। যার ৮৩.২১ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ, প্রায় ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা সরকারের নেওয়া। তাতে সরকারের নিজস্ব, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সরকারি সংস্থার ঋণ রয়েছে। বাকি ঋণের দায় বেসরকারি খাতের।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বেশি হারে সুদ ও কঠিন শর্তে নেওয়া এসব ঋণ সরকারি সংস্থাগুলোর দেওয়া পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে।

৫০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ হাতে নিয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২০০৮-০৯ সালে সরকারের বিদেশি ঋণ ৫০ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বিগত ১৫ বছর ৮ মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। এটা হাসিনার ঋণ বিলাসের রেকর্ড।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে সরকার ও বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন (৯ হাজার ৯৩ কোটি) ডলার। অর্থাৎ তিন মাসেই প্রায় ৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ নিয়েছে হাসিনা সরকার।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাবেক সরকারের যথাযথ ঋণ ব্যবস্থাপনা না থাকায় দেশি উৎস থেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নেওয়া হয়েছে। যদিও বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশি ঋণ নেওয়াকে সবসময় স্বাগত জানান অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। গত ১৫ বছরে অনেক বিদেশি ঋণও নেওয়া হয়েছে। তবে এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয়েছে দর-কষাকষি ও বাছবিচারহীনভাবে; যা সরকারের দায়-দেনা পরিস্থিতিতে চাপ বাড়িয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট তৈরি হওয়ায় মার্কিন সুদের হার বৃদ্ধি পায়, যার প্রভাবে বিদেশি ঋণের সুদের হারও বাড়ে। পাশাপাশি দেশের টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের ফলে বিপাকে পড়ে বেসরকারি খাতের বিদেশি ঋণ নেওয়া ব্যবসায়ীরা। এজন্য বিদেশি ঋণ নেওয়ার চেয়ে পরিশোধে মনোযোগী হয় তারা। কিন্তু ডলারের দর অস্থিতিশীল হওয়া ও দেশে ঋণে সুদের হার বাড়তে থাকায় বিদ্যমান পরিস্থিতির মধ্যেই ফের বিদেশি ঋণ নিতে শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। এমন বিশ্লেষণই করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার সরকার যে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত করেছে কিংবা বাস্তবায়ন করছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর। মূলত এই মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়েই বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।